পঞ্চম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে প্রতীক বরাদ্দের পর জোর প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির এ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এখন বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। ফলে ভালো অবস্থানে রয়েছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা। আবার কোনো কোনো ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী। ফুলকী ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহীন তালুকদারের তুলনায় বিদ্রোহী প্রার্থী মো. আব্দুস সালাম খান (বাদল মাস্টার) ১নং ওয়ার্ডের একক প্রার্থী হওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। পিছিয়ে নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শামছুল আলম বিজুও। সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বসে নেই বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম বাবুল। কাউলজানী ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী হবি ও দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ভোটাররা ধারণা করছেন। এ ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থী মো. আবু বকর সিদ্দিকী সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে থেমে নেই কৃষক শ্রমিক জনতালীগের মনোনীত প্রার্থী মো. ওয়াজেদ আলী মাস্টার। এছাড়া কাশিল ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে এক ডজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত মির্জা রাজিক, বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তোফাজ্জল হোসেন খান, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. রমজান মিয়া, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী খন্দকার লুৎফর রহমান ও শামীম মাহমুদ গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ইউনিয়নে জনসমর্থনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর চেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীরাই এগিয়ে রয়েছেন। তবে বিএনপি প্রার্থীরাও কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও প্রচারণায় মুখরিত করে রেখেছেন নির্বাচনী এলাকা। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন মো. সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ফনি, মো. বারিকুল ইসলাম, দেওয়ান শহীদুল ইসলাম (তৌহিদুল), আলাল উদ্দিন, জাকির হোসেন, মো. ইলিয়াজ জামান ও তোফাজ্জল খান।এদিকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আওলাদ হোসেন খান আদিল ও দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুস সামাদ ফারুকের সঙ্গে ভোটের কাটাকাটিতে বাড়তি ফায়দা লুটতে পারে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মামুন অর রশিদ খান বলে ভাবছেন এলাকার সাধারণ ভোটাররা। এ ইউনিয়নে বিএনপির একক প্রার্থী এ.বি.এম মাসুদুল আলম প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। হাবলা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মো. খোরশেদ আলম। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক মেম্বার খন্দকার আরিফুল ইসলাম নাজির ও মো. আলী আজম। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সৈয়দ নিজামুল ইসলাম রূপন। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী ৩ বারের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান নাদু ও মো. মেহেদী হাসান মিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা সকলেই নির্বাচনী মাঠ সরগরম করে রেখেছেন। উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জমজমাট ভোট যুদ্ধ ও একটি উৎসবমুখর নির্বাচনী অনুষ্ঠানের প্রতীক্ষায় রয়েছেন সাধারণ ভোটাররা। নির্বাচন নিয়ে কিছুটা আশঙ্কা থাকলেও সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বেছে নিতে চান তারা। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাবৃন্দ। উল্লেখ্য, এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে আগামী ২৮ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে সীমানা নির্ধারণ জটিলতার কারণে বাসাইল সদর ইউনিয়নে নির্বাচন হচ্ছে না।আরিফ উর রহমান টগর/এফএ/পিআর
Advertisement