জাতীয়

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে

পাবনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়ার অধিদফতর।আবহাওয়ার অধিদফতর সূত্রে জানাযায়, আজ (শুক্রবার) সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘন্টায় আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।এদিকে পৌষের শুরুতে শৈত্যপ্রবাহের সাথে হিমেল বাতাস জনজীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। দিনের বেশিরভাগ সময় থাকছে কুয়াশাচ্ছন্ন। সূর্যের দেখা মিললেও তাতে থাকছে না তাপের প্রখরতা। উত্তর জনপদের সব খানেই শীতের প্রকোপ। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগী। শীতে ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া ও সর্দি-কাশিসহ নানা রোগে ভুগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। ঠান্ডায় গৃহপালিত পশুরও নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। রোগে আক্রান্ত পশুর মৃত্যুর হারও দিন দিন বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।চলতি রবি মৌসুমে এই অঞ্চলের মাঠে রয়েছে আলু, গম, পান, ডাল, ভুট্টা, সবজি ও বোরোর বীজতলা। প্রতিকুল আবহাওয়ায় এই ফসলগুলো নিয়ে ক্ষতির আশংকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।শৈত্যপ্রবাহের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ অঞ্চলের বোরো বীজতলা ও রবি ফসল। কোল্ড ইনজুরি ও পচনসহ মড়কের আশঙ্কায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হযরত আলী। তিনি জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় তারা কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisement

বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়ছেন নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষেরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভীড় বাড়ছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। আবার অনেকেই তাকিয়ে রয়েছেন মানবিক সহায়তার দিকে। এরই মধ্যে দুস্থদের সহায়তায় কম্বলসহ শীতবস্ত্র বিতরণ হচ্ছে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে। সরকারি উদ্যোগেও চলছে এ কার্যক্রম।শীতে কর্মজীবী খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষেরা ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। সামর্থবানেরাও শীতবস্ত্রের জন্য বিপণি বিতানের পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বাড়ায় দাম বেড়েছে শীতবস্ত্রেরও।গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষেরা জানান, শীতের তীব্রতায় গরম কাপড়ের অভাবে কাজকর্মে বিঘ্ন ঘটছে। সকালে সঠিক সময়ে কাজে যেতে পারছেন না তারা। তাই শীতে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষরা। ফলে জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের। শ্রমজীবী মানুষেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। কাজ করতে না পারায় পরিবারের খাদ্যের সংস্থান করতে পারছেন না হতদরিদ্ররা। এই অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণে শীতবস্ত্র সরবরাহ ও নিম্নবিত্ত-ছিন্নমূল মানুষের দোরগোড়ায় সাহায্য পৌঁছে দিতে সরকার ও বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সচেতন মানুষেরা।এদিকে শীতজনিত রোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে অন্তত: অর্ধশত রোগী। এরমধ্যে বেশিরভাগই শিশু। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শীতজনিত ডাইরিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে।রামেক হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আসগর হোসেন বলেন, শীতে শিশুরা ‘কোল্ড ডায়রিয়া’য় বেশি আক্রান্ত হয়। শিশুদের যেন ঠান্ডা না লাগে সে বিষয়ে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।শুক্রবার সকাল ৬টায় ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সারা দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।আগামী ৭২ ঘন্টার আবহাওয়ার অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়, এ সময়ে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। আগামীকাল ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে।