ঢাকা ক্যাপিটালস দলে নিলেও প্রথম ৩ ম্যাচে সাব্বির রহমানকে খেলাননি দলের হেড কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। কী কারণে অন্যতম হার্ডহিটারকে খেলাচ্ছেন না সুজন, তা নিয়ে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ও ভক্তদের মধ্যে চালাচালি হচ্ছিলো নানা কথা। শেষমেশ সুজন নিজের মতো করে কারণ ব্যাখ্যা করলেন। জানালেন, শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে সাব্বিরকে খেলাননি তিনি।
Advertisement
দলের সঙ্গে অনুশীলনে আসেন না সাব্বির, সে অপরাধের শাস্তিই নাকি দিয়েছেন সুজন। ঢাকার কোচ হয়তো সাব্বিরের মনে জেদ তৈরির জন্যই কথাগুলো বলেছিলেন গণমাধ্যমে এসে। যেন পথ হারানো ঢাকার একাদশে সুযোগ পেয়ে ভালো কিছু করতে পারেন ডানহাতি ব্যাটার।
গণমাধ্যমে শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়টি জানিয়ে চতুর্থ ম্যাচের সাব্বিরকে একাদশে নেন সুজন। তবে ওই ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারেননি সাব্বির। কিন্তু নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আসল রূপ দেখালেন দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই তারকা। গতকাল বৃহস্পতিবার চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ৩৩ বলে ৮২ রানের মারকুটে ইনিংস খেলেন সাব্বির। ৯ ছক্কার সঙ্গে হাঁকান ৩ চার।
সাব্বিরের জ্বলে ওঠার দিনে অবশ্য জয় পায়নি ঢাকা। চিটাগংয়ের কাছে শাকিব খানের দল হেরে গেছে ৭ উইকেটে। এ নিয়ে ৫ ম্যাচের সবগুলোতেই হারলো ঢাকা।
Advertisement
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সাব্বির। সেখানে সুজনের অভিযোগের জবাব দেন তিনি। ইচ্ছাকৃত নয়, বরং পারিবারিক কারণেই অনুশীলনে আসতে পারেননি তিনি। এমনকি সবকিছু সুজনকে জানিয়েই করেছেন সাব্বির।
সাব্বির বলেন, ‘কোচের সঙ্গে কথা হয়েছিল আমার। কোচকে বলেছিলাম যে আমার পারিবারিক ইস্যু আছে। তিনি হয়তো বুঝতে পারেননি। আমার মনে হয় দলের ভেতরের কথাগুলো সংবাদমাধ্যমে না বলাই ভালো।’
বিভিন্ন সময় সাব্বির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ পাওয়া যায়। নিজেও স্বীকার করেন সেটি। চেষ্টা করেন নিজেকে শুধরে নিতে। কিন্তু কিছু মানুষ পেছনে লেগে থাকে। যে কারণেই ঠিকঠাক মতো নিজেকে সামলাতে পারছেন না সাব্বির।
তিনি বলেন, ‘ছোট থেকেই এসব সামলে আসছি, বড় হয়ে নিজেকে কীভাবে সামলাবো। তবু সাব্বির রহমানের কিছু হলেই শৃঙ্খলার কথা চলে আসে। আমি চেষ্টা করছি ঠিক করার জন্য। কিন্তু আশপাশের কিছু লোক হয়তো ভালো হতে দিচ্ছে না। তবে এটা নিয়ে আমি বেশি চিন্তিত নই। আমার কাজ খেলা, পারফর্ম করা। সেটাই করছি।’
Advertisement
দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে সাব্বির। সর্বশেষ খেলেছেন ২০২২ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত ত্রিজাতি টি-টোয়েন্টি সিরিজে। সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৯ সালের জুলাইয়ে আর টেস্ট ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তবে এখনো লাল-সবুজ জার্সি গায়ে জড়ানোর স্বপ্ন দেখেন সাব্বির।
সাব্বির বলেন, ‘স্বপ্ন তো সবাই দেখে। আমাকে ইয়াং বলতে পারেন, সিনিয়রও বলতে পারেন। দুটো মিলিয়েই আমি। আমার ফিটনেস এখনো পড়ে যায়নি। দুই-তিনটি ইনিংস যদি ভালো খেলতে পারি, নির্বাচকেরা যদি সুযোগ করে দেন, অবশ্যই চেষ্টা করবো ভালো (জাতীয় দলে) খেলতে।’
সুজনের অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করার জন্য শেষে আরও কিছু কথা জুড়ে দেন সাব্বির। তিনি জানান, রাজশাহীতে তিনি নিয়মিতই অনুশীলন করেন। নিজ খরচে ও নিজের কেনা সরঞ্জাম ব্যবহার করেই অনুশীলন চালিয়ে যান তিনি।
বিপিএলের গত আসরে দল না পাওয়া সাব্বির বলেন, ‘আমি নিয়মিতই অনুশীলন করি। চেষ্টা করছি আবার ফেরার জন্য। বিপিএলে সুযোগ পেয়েছি… আলহামদুলিল্লাহ। চেষ্টা করবো ভালো খেলার জন্য।’
এমএইচ/এমএস