গাইবান্ধা সদরে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪৫টি ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগেও অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে আবার কাজ শুরু হয়েছে। তবে দ্বিতীয় দফার কাজেও অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
Advertisement
অভিযোগ উঠেছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির অন্য সদস্যদের না জানিয়েই সভাপতি নিজে পিআইও অফিসের ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে কাজ করাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ দিতে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের দক্ষিণ আনালেরতারি গ্রামে খাসজমিতে ৪৫টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ তিন লাখ ৫ হাজার টাকা। এসব ঘরে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর ও একটি বাথরুম থাকবে।
সরেজমিন দেখা যায়, বন্যার পানির লেবেলের নিচে ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। বন্যায় এসব ঘরের মেঝে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী। আগের করা ভিত ভেঙে নতুন করে ভিত করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। পুরোনো ভিতের ওপরেই ইটের গাঁথুনির কাজ চলছে। অন্যদিকে কাজ চলমান অবস্থায় পিলার হেলে পড়েছে। ইট, বালু ও খোয়ার মান খারাপ হওয়ায় ঘরের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
Advertisement
ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘গরিবদের ঘর বললে ভুল হবে। গরিব মারার ঘর বললে ভালো মানাবে। ঘরের কাজের মান এতই খারাপ যে, এক বছরের মধ্যই ঢালাই খসে পড়বে।’
বাসিন্দা বাবলু মিয়া, ইব্রাহিম খান, শামীম মিয়া, হাবিবুল্লাহসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘কাজের মান শুরু থেকেই খারাপ। বারবার বাধা দেওয়ার পরও কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পিআইও অফিসের ইঞ্জিনিয়ার জোবায়ের রহমান কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছেন না। সিমেন্ট ও রড পরিমাণে কম দেওয়ায় ঘরের পিলার ভেঙে পড়েছে। ঘরগুলো নিচু জায়গায় স্থাপন করায় সামান্য বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’
এ বিষয়ে প্রকল্পের সদস্য সচিব পিআইও রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ বলেন, ইঞ্জিনিয়ার জোবায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারি না।
কাজে দেখভালের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার জোবায়ের রহমান বলেন, ‘কাজ করতে গেলে মানুষতো অভিযোগ দেবেই। ঘরতো এখনো হস্তান্তর করা হয়নি। কাজ চলছে। ঘরের যে যে জায়গায় সমস্যা হবে, সেগুলো ঠিক করে দেবো।’
Advertisement
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করে ঠিক করে দেওয়া হবে।
এএইচ শামীম/এসআর/জিকেএস