মিয়ানমারের রাখাইনে অস্থিরতায় একমাস ধরে বন্ধ রয়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরের পণ্য আমদানি। ফলে শত শত কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ওপারে ব্যবসায়ীদের শতশত কোটি টাকার মালামাল পড়ে রয়েছে।
Advertisement
টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসিম উদ্দিন বলেন, রাখাইনে আরাকান আর্মি ও দেশটির জান্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের কারণে টেকনাফে স্থলবন্দরে পণ্য আমদানিতে ধস নেমেছে। গত এক বছরের ৯০ ভাগ আমদানি কমে গেছে। সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সে সঙ্গে এপারের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গত এক মাস ধরে মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, টেকনাফের ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকার পণ্য সেখানে পড়ে রয়েছে। সেগুলো তারা আনতে পারছে না। যদি আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে এ বিষয়ে সমঝোতা হয়, তাহলে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যগুলো আনতে পারবেন। সরকারও শতশত কোটি টাকার রাজস্ব পাবেন।
টেকনাফ স্থলবন্দর কাস্টমস কর্মকর্তা বিএম আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধে টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি কমে গেছে। গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসে আমদানি হয়েছে ৪৭ হাজার টন মালামাল। তার পরিবর্তে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৫৭ কোটি টাকা।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, বন্দরে পূর্বে মায়ানমার থেকে জান্তা সরকারে অধীনে যে মালামালগুলো বন্দরে আসত সেগুলো গত ৮ ডিসেম্বর আরাকান আর্মি মিয়ানমার মংডু শহর দখলে নেওয়ার পর থেকে পণ্যবাহী জাহাজ আসতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। পণ্যবাহী জাহাজগুলো নির্বিঘ্নে আসতে পারছে না আরাকান আর্মির কারণে। সরকার দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে। শিগগির এ সমস্যাটি নিরসন হলে চলতি অর্থ বছরে পণ্য আমদানি হলে আশা করি রাজস্ব আদায় করা সম্ভব।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহেতাশামুল হক বাহদুর বলেন, মিয়ানমারের অস্থিরতায় বন্দরের ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মধ্যে পড়ছি। এক বছর ধরে ঠিকমত মিয়ানমার থেকে পণ্য আমদানি করতে পারিনি। ব্যবসায়ীদের শতশত কোটি টাকার মালামাল মিয়ানমার রয়েছে গেছে।
হাইওয়ে সড়ক টেকনাফ স্থলবন্দরের পাশে ছোট চায়ের দোকানদার ছৈয়দ হোসেন বলেন, বন্দরে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা যখন কাজ করেন তখন দোকানে বেচা-কেনা হলে আমার সংসারের খরচ যোগাতে পারি। এখন বন্দরে সে আগের মত লোকজনের আসা-যাওয়া কমে গেছে। সে কারণে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
রাখাইন রাজ্য দখল নিতে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই শুরু করেন। এতে করে গত এক বছর যুদ্ধ চলে। এখনো সেই যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে। তাতে আরকান আর্মি মংডুসহ রাখাইনের এক-তৃতীয়াংশ গ্রাম শহর তারা দখল করেছেন।
Advertisement
জাহাঙ্গীর আলম/আরএইচ/জিকেএস