পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার কথা শুনলে প্রথমেই যে ছবিগুলো ভেসে ওঠে সেগুলো হচ্ছে ট্রাম, হলুদ-কালো ট্যাক্সি, হাতে টানা রিক্সা আর ঘোড়ার গাড়ি। কলকাতার ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে এই পরিবহন গুলোর নাম।
Advertisement
আধুনিক এই জামানায়ও দেশ-বিদেশের পর্যটকদের পছন্দের পরিবহন কলকাতার হলুদ-কালো ট্যাক্সি। তবে ধীরে ধীরে শহরের রাজপথ থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে কলকাতার ট্রাম। ঐতিহ্যবাহী ট্রামের পর রাজপথে আর দেখা যাবে না হলুদ-কালো ট্যাক্সিও। সময় যত গড়াচ্ছে আশঙ্কা ততই প্রকট হচ্ছে।
পরিবেশ আদালত জানিয়েছে, রাজ্যের হলুদ-কালো ট্যাক্সি ১৫ বছরের বেশি বয়স হয়ে গেলে আর চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না। পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কলকাতার এই মুহূর্তে প্রায় ৪৫০০ মিটার যুক্ত হলুদ-কালো ট্যাক্সি রয়েছে। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যাটা কমতে শুরু করবে এবং ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ সেই সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৩ হাজার।
রাজ্যের পরিবহন দপ্তর বিএস-৬ দূষণ বৃদ্ধির মাপকাঠি মেনে তৈরি মিটার যুক্ত পরিবহনের পক্ষে। পুরোনো অ্যাম্বাসেডর মডেলের গাড়ি ১৫ বছরের বেশি বয়স হয়ে গেলে সেগুলো রেখে দেওয়ার আর কোনো উপায় নেই।
Advertisement
হলুদ-কালো ট্যাক্সিকে বাঁচাতে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিষ চক্রবর্তীকে চিঠি লিখেছেন শ্রমিক ইউনিয়ন এবং ট্যাক্সি মালিকরা। তাদের দাবি, ওই পারমিটেই নতুন গাড়ি নামাতে দেওয়া হোক এবং তার রঙ হবে হলুদ। কারণ এই হলুদ-কালো ট্যাক্সির সঙ্গে কলকাতার ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে।
হলুদ-কালো ট্যাক্সির চালক রামপাল পান্ডে বলেন, কলকাতার রাস্তা থেকে হলুদ ট্যাক্সি তুলে নেওয়া হচ্ছে। কারণ কোম্পানিগুলো এর পারমিট ১৫ বছর পর্যন্ত করেছে। এখন আর নতুন করে কোনো হলুদ ট্যাক্সি তৈরি হচ্ছে না।ফলে ধীরে ধীরে এসব গাড়ি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
রামপাল পান্ডে আরও বলেন, ৫০ বছর ধরে এই ট্যাক্সি চালাচ্ছি। এর সঙ্গে একটা আবেগ জড়িয়ে আছে। কিন্তু কি করবো কোম্পানি নতুন আর হলুদ ট্যাক্সি তৈরি করছে না। রুটি-রুজির জন্য আমাদের অন্য কোনো গাড়ি চালাতে হবে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
অপর এক হলুদ-কালো ট্যাক্সি চালক ফাগু যাদব বলেন, এই ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে গেলে বেকারের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যাবে। এতো দাম দিয়ে নতুন গাড়ি কিভাবে কিনবো। আমরা আশা করছি সরকার এর বিকল্প উপায় বের করবে। এই বিষয়টি নিয়ে পরিবহন দপ্তর শিগগিরই ট্যাক্সি ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বলে জানিয়েছে রাজ্য পরিবহন দপ্তর।
ডিডি/টিটিএন