আন্তর্জাতিক

ঘুসের মামলায় সাজা হবে ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিউইয়র্কে ঘুসের মামলায় সাজা ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন একজন বিচারক। আগামী ১০ জানুয়ারি এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে। এর দুই সপ্তাহের মধ্যেই তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কথা রয়েছে।

Advertisement

তবে নিউইয়র্কের বিচারক জুয়ান মার্চান ট্রাম্পকে কারাদণ্ড বা জরিমানা না দিয়ে ‌‘শর্তহীন খালাস’ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি তার আদেশে লিখেছেন, ট্রাম্প সশরীরে কিংবা ভার্চুয়ালি শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন।

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জয়কে তার বিরুদ্ধে থাকা মামলা বাতিলের জন্য ব্যবহার করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। তবে সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিচারকের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে, ‘অবৈধ রাজনৈতিক হামলা’ এবং ওই মামলাকে একটি ‘সাজানো পরিহাস’ বলে বর্ণনা করেছেন।

পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলকে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুস দেওয়ার বিষয়টি জালিয়াতির মাধ্যমে নথিতে গোপন রাখার বিষয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছিল।

Advertisement

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিকে ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন ওই অর্থ স্টর্মি ড্যানিয়েলের হাতে তুলে দেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে এ মামলায় নির্দোষ দাবি করেন। তার দাবি, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ক্ষতি করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিভেন চিয়াং তাকে সাজা দেওয়ার বিষয়ে সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, ট্রাম্পকে অবশ্যই প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা এবং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে এবং তাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দণ্ড হওয়া উচিত নয় এবং তিনি তার লড়াই অব্যাহত রাখবেন।

এ মামলার বিরুদ্ধে শেষ আবেদনে ট্রাম্প বলেছিলেন, এটি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের সময় তার মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে এবং দায়িত্ব পালনে তার সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বিচারক মার্চান বলেন, ট্রাম্পের উদ্বেগের বিষয়গুলোতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ তিনি পেয়েছেন।

Advertisement

এক্ষেত্রে তার হাতে যেসব বিকল্প আছে তার একটি হলো দণ্ডাদেশ বাস্তবায়ন ২০২৯ সালে তার হোয়াইট হাউজ ছাড়া পর্যন্ত বিলম্বিত করা কিংবা দণ্ড দিলেও তার সাথে জেলে থাকার বিষয়টি থাকবে না।

এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের আদেশে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন প্রাতিষ্ঠানিক কাজের জন্য তিনি দায়মুক্ত থাকবেন বলে যে আদেশ দিয়েছিল, সেটিকে আদালতের সামনে যুক্তি হিসেবে নিয়ে আসার চেষ্টা করে সফল হননি। গত জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্ট ওই আদেশ দিয়েছিল।

গত মাসে ট্রাম্পের ঘুসের মামলা খারিজ চেয়ে যে আবেদন করা হয়েছিল তা খারিজ করে দিয়েছিলেন বিচারক মার্চান। ট্রাম্প এখন হোয়াইট হাউজের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে দণ্ড পেতে যাচ্ছেন। তবে দণ্ড পাওয়ার পর তিনি আপিলের উদ্যোগ নিতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রে নথি জালিয়াতির মামলায় চার বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান আছে কিন্তু ন্যূনতম দণ্ড বা কারাবাস অবশ্য পালনীয় নয়। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প জেলে যাবেন না বলেই মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

এর কারণ হিসেবে তারা ব্যাখ্যা করেন, ট্রাম্প একজন প্রবীণ ব্যক্তি এবং ‘ফার্স্ট টাইম অফেন্ডার’ অর্থাৎ প্রথমবার কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তাই তাকে কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ভিড়ের মধ্যে ঢুকে গেলো গাড়ি, নিহত ১০ মন্টিনিগ্রোতে গোলাগুলির ঘটনায় শিশুসহ নিহত ১০

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও তিনটি রাজ্যে অভিযোগ ও ফেডারেল ক্রিমিনাল মামলা আছে। এর একটি গোপনীয় নথির বিষয় আর দুটি হলো ২০২০ সালের নির্বাচনী ফলাফল সংক্রান্ত। এর আগে গত ২৬ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে দণ্ড দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতায় বিচারক তা পিছিয়ে দেন।

টিটিএন