ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, গোলাপ, গাঁদা সারি সারি বর্ণিল ফুলের সমাহার। যেদিকে চোখ যায়–শুধু রঙের খেলা। চেনা দেশি ফুলের পাশে আছে বিদেশি ফুলের বাহারও। ফুলের এমন জলসায় রঙের মেলায় বিমুগ্ধ দর্শনার্থীরা। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে সাগর পাড়ে গড়ে তোলা ডিসি পার্কে বসবে ফুলের মেলা, রঙের আসর। পুরো পার্ক সেজেছে নানা রঙের ফুলে। উৎসবে দেশি–বিদেশি ১৩৬ প্রজাতির লাখো ফুলের মেলা বসছে এবার। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে মাসব্যাপী এ ফুল উৎসব ২০২৫ আগামীকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় উদ্বোধন করা হবে।
Advertisement
এতে প্রধান অতিথি থাকবেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ। এছাড়াও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ফুল উৎসবের বিভিন্ন প্রস্তুতির বিষয় তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফুল উৎসব এটি। চট্টগ্রামে তৃতীয় বারের মতো এ আয়োজন হতে যাচ্ছে। এটি হবে আনন্দ, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের এক অপূর্ব সমাবেশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা ফুলের সমারোহে ডিসি পার্ককে সাজানো হয়েছে। প্রতিটি প্রজাতি ভিন্ন রং, আকৃতি এবং ঘ্রাণে সমৃদ্ধ যা সহজে দর্শকের মনকে আলোড়িত করবে। দর্শকপ্রিয় করতে বাগান সাজানো হয়েছে দুবাইয়ের মিরাকল গার্ডেনের আদলে। ডিসি পার্কের এ ফুল উৎসব দেখতে চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফুল প্রেমীদের সমাগম ঘটে এখানে। গত বছর এখানে প্রায় ১০ লাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। এবার ১২ লাখ ফুলপ্রেমীর সমাগমের আশা করছি।
তিনি বলেন, এবারের উৎসবে থাকছে ১৩৬ প্রজাতির লক্ষাধিক ফুলের সমারোহ, মাল্টি কালচারাল ফেস্টিভ্যাল, বই মেলা, পুতুল নাচ, গ্রামীণ মেলা, লেজার লাইট শো, ভায়োরিন শো, মুভি শো, জুলাই–আগস্ট অভ্যুত্থান কর্নার ও পাবলিক টয়লেট। পিঠাপুলি উৎসব। এছাড়াও থাকছে চিত্রশিল্পীদের প্রায় ২০০টি চিত্রকর্ম। উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের নিজেদের ছবির ক্যারিকেচার আঁকার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
Advertisement
জেলা প্রশাসক বলেন, আয়োজনে রাখা হয়েছে ঘুড়ি উৎসব ও নৌকাবাইচ। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক আয়োজনসহ বিভিন্ন আয়োজন। দেশি–বিদেশি নানা রঙের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে চট্টগ্রামের ডিসি পার্ক। সাগরপাড়ে ১৯৪ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা ১৩৬ প্রজাতির ফুলের এ বাগান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে সৌরভ।
এ সময় স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক নোমান হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ কে এম গোলাম মোর্শেদ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট সৈয়দ মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) শরিফ উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) মো. আবু রায়হান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (স্থানীয় সরকার শাখা) এস এম জামিউল হিকমা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল ইসলাম, পান্না আক্তার, মো. আলাউদ্দিন, মো. আল আমিন হোসেন, শাহীন ইশরাক, খন্দকার ফারজানা নাজরীন সেতু, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে এম রফিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পার্ক দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। টিকিটের মূল্য হবে জনপ্রতি ৫০ টাকা।
এম মাঈন উদ্দিন/আরএইচ/এএসএম
Advertisement