দেশজুড়ে

নতুন বই দিতে শিক্ষার্থীপ্রতি ১০০ টাকা আদায়ের অভিযোগ

মুন্সিগঞ্জে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির নতুন বইয়ের জন্য প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। এছাড়া ছাড়পত্র দিতেও নেওয়া হয়েছে ২০০ টাকা। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

Advertisement

তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল ইসলাম সিকদার।

বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক জানান, বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বই দেওয়ার জন্য প্রতিটি শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেন শিক্ষকরা। যারা পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের ছাড়পত্র দিতেও নেয়া হচ্ছে ২০০ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ১৩৫ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৩০ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১১৫ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১১৫ এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের মধ্যে গত দুদিনে প্রথম শ্রেণির ৭০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণির ৮২ জন, তৃতীয় শ্রেণির ১০১ জন শিক্ষার্থী নতুন বই নিয়েছেন। তবে শিশু ও পঞ্চম শ্রেণির কোনো শিক্ষার্থী বই পায়নি। দুয়েক দিনের মধ্যে পাবে নতুন বই তারা।

Advertisement

নতুন বই নেওয়া চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, বই দেওয়ার কথা বলে আমাদের বুধবার বিদ্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। পরে স্যার ও ম্যাডামরা আমাদের কাছে ১০০ টাকা করে নেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়টির তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, গ্রামের স্কুল, স্যাররা যা কয় তাই আমরা বিশ্বাস করি। আমরা জানতাম সরকারি কোনো খরচ নাই। তয় কি কারণে ১০০ টেকা হেরা নিবো জিগাই ছিলাম। স্যাররা কইলো বই দিবো খরচ আছে। আবার কেউ কইলো স্কুলের আয়া খালারে দিবো।

এছাড়া পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ ৬৬ জন শিক্ষার্থী ছাড়পত্র বাবদ এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়েছেন ২০০ টাকা করে।

পঞ্চম শ্রেণি থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী আব্দুল খালেক বলেন, আমি বিনোদনপুর রামগোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। সেখানে প্রাইমারী স্কুলের টিসি চায়। টিসি নিতে আসলে ২০০ টাকা নিয়েছেন শিক্ষকরা।

Advertisement

তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল ইসলাম সিকদার টাকা নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বই এবং ছাড়পত্র দিয়ে কারো কাছ থেকে কোনো ধরনের টাকা নেওয়া হয়নি। যারা বলেছে তারা ভুল বলেছে। আমি এ কয়দিন বই আনা-নেওয়া নিয়ে অনেক ব্যস্ত ছিলাম।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মোমেন মিয়া বলেন, নতুন বই দেওয়া এবং সনদ দেওয়া বাবদ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি স্কুলের শিক্ষকরা এমন কাজ করে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরাফাত রায়হান সাকিব/আরএইচ/এএসএম