বেশ গুরুগম্ভীর একটি বিষয় ‘লোক প্রশাসন’। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের এই বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিতে পারেন বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক সব শাখার শিক্ষার্থীরা। কিন্তু কী এই লোক প্রশাসন? এই বিষয়ে পড়ার সুবিধা-অসুবিধাগুলোই বা কী?
Advertisement
একটি রাষ্ট্রে সরকার যে নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করে, জনগণের কল্যাণে সেসব বাস্তবায়ন করা এবং আইন প্রয়োগের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই লোকপ্রশাসন।
তবে একাডেমিক ডিসিপ্লিন হিসেবে লোক প্রশাসন পাশ্চাত্যে অনেক পুরোনো। ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একাডেমিক বিষয় হিসেবে এটি পড়ানো হচ্ছে। বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঠিক পরই ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়টির যাত্রা শুরু হয়। স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৯৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিভাগ যাত্রা শুরু করে।
আরও পড়ুন:
Advertisement
এই বিষয়টি নিয়ে পড়ার রয়েছে নানান রকম সুবিধা। সরকারি-বেসরকারি বা কোনো ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে চাকরি করতে গেলে এই বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটরা ভালো করতে পারবেন। কারণ লোকনীতি ও সরকারি প্রশাসন সংক্রান্ত অনেকগুলো বিষয় পড়ানো হয় এই বিভাগে।
এই বিষয়ে পড়াশোনা করে সরকারি-বেসরকারি খাত ও এনজিও-আইএনজিও সেক্টরে কাজ করছেন অনেকে। এমনকি ব্যাংক-বীমার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারনী জায়গাতেও কাজ করছেন অনেকে। সবচেয়ে বড় কথা, গবেষণা শিখতে ও উচ্চতর শিক্ষা নিতে যারা বিদেশে যেতে চান, তাদের জন্য এই বিষয়টি অত্যন্ত কার্যকর। কারণ এই বিষয়ের শিক্ষার্থীদের কোয়ান্টিটিভে, কোয়ালিটিটিভ ও মিক্সড্ মেথডে গবেষণা হাতে কলমে শেখানো হয়। ফলে গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়া এই বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটদের জন্য সহজ হয়।
আরও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয় নির্ধারণ করবেন কীভাবে কৃষিবিজ্ঞানে অনার্স, চাকরি কোথায়তবে অন্য বিষয়গুলোর মতো লোক প্রশাসনে চাকরির বাজারটা দেশে তুলনামূলক সীমিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরুল মোমেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশের বেশ কিছু লিডিং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ও ফুলটাইম রিসার্চ ফ্যাকাল্টি হিসেবে কাজ করছে। এবং সুনামের সঙ্গে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে যাচ্ছে।’ তিনি এও বলেন, ‘তবে এ কথাও সত্য যে, বাংলাদেশের চাকরির বাজারে এই বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটদের একটা বড় রকমের সংকটও আছে।’
Advertisement
জনসেবা ও গবেষণায় যাদের তীব্র আগ্রহ আছে, তাদেরই লোকপ্রশাসনে পড়া উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের পেশাজীবী ও শিক্ষকেরা।
এএমপি/আরএমডি/এমএস