সারাক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা, শপিং করে বিল মেটানো থেকে শুরু করে বাস-ট্রেনের টিকিট কাটা, সিনেমা দেখা সবই সম্ভব এক স্মার্টফোনে। তাই তো বলা যায়, সঙ্গে স্মার্টফোন থাকলে আর কিছুই লাগে না।
Advertisement
এরই মধ্যে বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রমাণ হয়েছে, স্মার্টফোন দৃষ্টিশক্তির উপর প্রভাব ফেলে। ব্যাহত হয় শিশুর বেড়ে ওঠা। ব্রেনেও প্রভাব ফেলে স্মার্টফোন। নতুন একটি গবেষণা প্রমাণ করেছে, স্মার্টফোন আম আদমির বয়সও বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাড়াচ্ছে সারা শরীরে ব্যথা। এই ব্যথা কখনো চরমও হচ্ছে।
ভারত ও বাংলাদেশের ৩২৬ জন শিক্ষার্থীর উপর এই সমীক্ষাটি করা হয়েছিল। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। যাদের মোবাইল আসক্তি চরমে। আর প্রত্যেকেই ঘাড়, কাঁধ, কনুই এবং হাতের ব্যথায় আক্রান্ত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ব্যথার নাম মাসকিউলার স্কেলেটাল পেইন। বাংলায় বলা যায়, অস্থি ও পেশীর চরম ব্যথা। গবেষকদের দাবি, ভুলভাবে মোবাইল ধরে দীর্ঘ সময়ে ব্যবহার করার ফলেই এমনটা হয়েছে।
আরও পড়ুন এক চার্জে এই ব্যাটারি চলবে ৫০ বছরযাদের উপর এই গবেষণা চালানো হয়েছিল, তাদের মধ্যে ৪৩.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ঘাড়ের সমস্যায় ভুগছে। কাঁধে ব্যথা রয়েছে ৪২.৯ শতাংশের। কনুই নিয়ে সমস্যায় রয়েছে ২৭.৯ শতাংশ। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ৬৯.২ শতাংশ পড়ুয়াই মৃদু থেকে ভালো মতো মোবাইল ফোনে আসক্ত।
Advertisement
এই ব্যথার মূল কারণ হিসেবে উঠে আসছে ভুলভাবে মোবাইল ধরা। এর জন্যই মূলত শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা হয়। ওই শিক্ষার্থীদের সব চেয়ে বেশি ব্যথা হচ্ছে মাথা এবং মেরুদণ্ডে। দুই হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল স্ক্রলিং এই ব্যথার মূল কারণ। খুব তাড়াতাড়ি অভ্যাস বদল না করতে পারলে ব্যথা চরম আকার নিতে পারে। এর জন্য মোবাইলে আসক্তি রয়েছে যাদের, তাদের জন্য বেশ কিছু উপায়ের খোঁজও দিয়েছেন গবেষকরা।
এই সমস্যার সমাধানে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ জেনে নিন->> গবেষকদের পরামর্শ মোবাইল সব সময়ে চোখের লেভেলে ধরতে হবে। মাথা থাকবে সোজা। সোজা থাকবে মেরুদণ্ড। এ রকমভাবে মোবাইল ধরতে পারলে অনেকটাই কমে যাবে যন্ত্রণা। ৩০ ডিগ্রি কোণ করে মোবাইল ধরে টাইপ করলে কমবে কাঁধ, পিঠের যন্ত্রণা।
>> কাজের সঙ্গেও এই রকমের ব্যথার একটা সম্পর্ক আছে। যাদের কাজের সূত্রে লম্বা লম্বা কল নিতে হয়, তাদের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, কান এবং মুখের যতটা সম্ভব কাছে ফোনটা ধরুন। আর একটা লম্বা সময়ের কল নিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। আর অবশ্যই হেডফোন ব্যবহার করুন।
>> স্মার্টফোনে টাইপ করতে হলে দুটো হাতের বুড়ো আঙুল দিয়েই করুন। এক হাতে টাইপ অনেক রকমের ব্যথা বেড়ে যায়। এ ছাড়াও একটা কার্যকরী উপায় আছে। স্ক্রিন থেকে প্রতি ২০ মিনিট অন্তর চোখ সরান। ঠিক ২০ ফুট দূরের কোনো জিনিসকে ২০ সেকেন্ড ভালো করে দেখুন। তার পর আবার স্ক্রিনে চোখ রাখুন। এতে চোখের ব্যথা অনেকটা কমবে। কমবে অন্য ব্যথাও। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব অফথ্যামোলজির এক সমীক্ষা অনুযায়ী, এই ২০ সেকেন্ড চোখকে রিসেট করে, চোখকে আরাম দেয়।
Advertisement
সূত্র: এই সময়
কেএসকে/জিকেএস