হাতের নখ শুধু সৌন্দর্যই বাড়ায় না, বরং স্বাস্থ্যের অবস্থারও জানান দেয়। পুরুষদের চেয়ে নারীরা লম্বা নখ রাখতে পছন্দ করেন। সবাই চায় তাদের নখ মজবুত ও চকচকে হোক।
Advertisement
তবে অনেকেরই নখ বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ভেঙে যায়। প্রায়ই যদি এ ঘটনা ঘটে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো নেই। কারণ শরীরে পুষ্টির অভাব হলে নখ ভেঙে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
শুধু দুর্বল নখ নয়, বরং নখে সাদা দাগ দেখা দেওয়াও কিন্তু বিপদের লক্ষণ। এমনটি হলে বুঝবেন আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি আছে। বর্তমানে কমবেশি সবাই অস্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যস্ত, এ কারণে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে।
আবার রাসায়নিক পণ্য ব্যবহারের কারণে অনেকের নখ দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে এগুলোই নখ ভেঙে যাওয়ার একমাত্র কারণ নয়, জানুন আরও কিছু কারণ সম্পর্কে-
Advertisement
পুষ্টির অভাব
দুর্বল নখের অন্যতম বড় কারণ হতে পারে শরীরে ভিটামিন, মিনারেল ও প্রোটিনের অভাব। বিশেষ করে বায়োটিন, ভিটামিন বি ১২, আয়রন ও ক্যালসিয়ামের অভাব নখকে দুর্বল করে দিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে যদি নখ ভাঙার সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই এই পুষ্টি উপাদানগুলোকে নিজের ডায়েটে যোগ করতে হবে।
পানি ও রাসায়নিকের সঙ্গে অতিরিক্ত সংস্পর্শ
ঘনঘন হাত ধোওয়া, দীর্ঘক্ষণ পানিতে থাকা বা রাসায়নিকযুক্ত নেইলপলিশ ব্যবহার করলেও নখ শুকিয়ে যায়। যা নখ ভেঙে যাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে।
Advertisement
আয়রনের ঘাটতি (অ্যানিমিয়া)
শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকলে নখ হলুদ, পাতলা ও ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। শুধু নখে নয়, শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দেয় আয়রনের ঘাটতি হলে। তাই পাতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি।
আরও পড়ুন হাত-পা সব সময় ঠান্ডা থাকে, কঠিন রোগের লক্ষণ নয় তো? কমলালেবুর খোসা খেলে শরীরে যা ঘটেডিহাইড্রেশন
পানির অভাবে শুধু ত্বকই নয়, নখও শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে সখ সহজেই ভেঙে যেতে শুরু করে। তাই শরীরে পানির ঘাটতি হতে দেওয়া চলবে না। শীতে অনেকেই কম পানি পান করেন, এই অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। তার চেয়ে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। দৈনিক অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করা জরুরি।
হরমোনের পরিবর্তন
গর্ভাবস্থা, মেনোপজ বা অন্যান্য হরমোনের পরিবর্তনের সময় নখ দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
নানা রোগ
হাইপোথাইরয়েডিজম, সোরিয়াসিস বা ডায়াবেটিসের মতো রোগও নখ দুর্বল করতে পারে। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে নখ ভেঙে যাওয়াসহ অন্যান্য উপসর্গও কমতে পারে।
নখ মজবুত করার উপায় কী?
সুষম খাদ্য
খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ জিনিস অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যেমন সবুজ শাক-সবজি, ডিম, বাদাম, দুধ, ডাল খেতে হবে।
বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট খেলে নখের শক্তি বাড়তে পারে। যাদের নখ ভাঙার সমস্যা আছে, তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।
নখকে হাইড্রেটেড রাখুন
নখ মজবুত করতে হলে তা হাইড্রেটেড রাখা জরুরি। এই অবস্থায় নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে নখ ম্যাসাজ করুতে পারেন। হাত ধোওয়ার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
নখের যত্ন নিন
নখ ভালো রাখতে হলে এর পরিচর্যা করাও জরুরি। এজন্য নিয়মিত ম্যানিকিউর ও পেডিকিউর করুন অভিজ্ঞদের দ্বারা। একই সঙ্গে ঘরের কাজ করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করুন। এতে নখ ভাঙার সমস্যা রোধ হবে, আবার নখও ভালো থাকবে।
সূত্র: ওয়েবএমডি/মেডিকেল নিউজ টুডে
জেএমএস/এএসএম