দেশজুড়ে

লালমনিরহাটে বইছে হিমেল হাওয়া, বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা

ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটের জনপদ। জেঁকে বসেছে শীত। বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। গত তিনদিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

Advertisement

শীতের দাপটে গ্রামাঞ্চলের অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছে না। ঘন কুয়াশার কারণে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাটের কৃষি আবহাওয়া অফিসের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সকাল ৭টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাট-বাজারগুলোতে গরম কাপড় কেনার ধুম পড়েছে। তবে শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।

Advertisement

হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী এলাকায় আকবর আলী বলেন, দুইদিন থেকে প্রচুর ঠান্ডা পড়ছে। খুবই কষ্টের মধ্যে আছি। কাজকাম কিছুই করতে পারছি না ঠান্ডার জন্য।

উপজেলার বড়খাতা বাজারের ভ্যানচালক মহির আলী বলেন, এই ঠান্ডায় কোনো যাত্রী পাচ্ছি না, বসে আছি। ঠান্ডায় বের না হলে খাবো কী?

হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনারুল হক বলেন, গত কয়েকদিন শীতের তীব্রতা কম থাকলেও তিনদিন থেকে শীত বেড়েছে। এতে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অসহায় ছিন্নমূল ও শীতার্ত মানুষের মাঝে এরইমধ্যে ১৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শীতবস্ত্র বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারিভাবেও শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন।

Advertisement

কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ১ মাস ধরে এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। চলতি মাসে দিনের তাপমাত্রা আরও কমে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার প্রকল্প ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উত্তম কুমার নন্দী বলেন, তিস্তা ও সানিয়াজান নদীবেষ্টিত এই উপজেলায় ছিন্নমূল শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রায় ২২শ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।

রবিউল হাসান/এফএ/এএসএম