খেলাপাগল এক পুলিশ কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান। বর্তমানে তিনি ডিএমপিতে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এনড অপস) হিসেবে হিসেবে কর্মরত। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে ফুটবলের মাধ্যমে অন্যান্য নৈপুণ্য প্রদর্শন করে বাংলাদেশের পক্ষে দু’বার গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী আবদুল হালিমকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সোমবার বিশেষ অতিথি হয়ে এসেছিলেন তিনি। বক্তৃতার এক পর্যায়ে পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আকস্মিক এক ঘোষণা দিয়ে সকলকে চমকে দেন। তিনি বলেন, ‘আমি আর কী দিয়ে হালিমকে সাহায্য করতে পারি। আমি আমার এক মাসের বেতন হালিমকে উৎসর্গ করলাম।’তিনি গত একযুগ যাবত হালিমকে নানাভাবে উৎসাহ জুগিয়ে চলেছেন। ২০০৪ সালে তিনি যখন মাগুরার এসপি হিসেবে কর্মরত ছিলেন তখন হালিমের ফুটবল নিয়ে নানা কসরত দেখে উৎসাহ জোগান। পরবর্তীতে পেশাগত কারণে বদলি হয়ে বিভিন্ন জেলা ও শহরে চাকরি করলেও হালিমকে মনে রাখেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সদালাপি এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম ওঠাতে চাইলে নানা নিয়ম-কানুন পালন করতে হয়। যে দেশ থেকে রেকর্ড করা হবে সে দেশে একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাকে বিচারকের দায়িত্ব দেয়া হয়। আবদুল হালিম ২০১২ সালে প্রথমবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফুটবল মাথায় নিয়ে ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখান। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফুটবল মাথায় রোল স্কেটিং চালিয়ে ২৭ সেকেন্ড ১০০ মিটার পাড়ি দিয়ে দ্বিতীয় বার গিনেজ বুব অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখান। ক্রীড়া পাগল এই পুলিশ কর্মকর্তা দু’বারই বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান বলেন, এ ধরনের প্রতিভাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা উচিত। নিজের সাধ্যের মধ্যে একমাসের বেতন দিয়ে তার অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে প্রেরণা যোগাতে অংশ নিয়েছেন মাত্র। দৈনিক জনকণ্ঠের ক্রীড়া ফটোসাংবাদিক আবদুল হান্নান তার ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ছবি পোস্ট করে ক্রীড়াপাগল এই পুলিশ কর্মকর্তার প্রশংসা করেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে আবদুল হান্নান বলেন, আবদুল হালিমের একটি ছেলে দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছেন বলে শুনেছি। স্পন্সর প্রতিষ্ঠান তাকে হয়তো বেশি টাকা দেবে। কিন্তু ডিআইজি মারুফ হাসান নিজের পরিবার পরিজনের হক মাসের পুরো বেতনটুকু আবদুল হালিমের হাতে তুলে দিয়ে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। এমইউ/এসএইচএস/পিআর
Advertisement