বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকা প্রকল্পের বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বাস্তবায়নে গতি আনার তাগিদ দিয়েছে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে চলমান ও নতুন অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করার কথাও বলেছে সংস্থাটি। অন্যদিকে প্রতিশ্রুতির আলোকে উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে সময় মতো অর্থ ছাড় করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে দুই দিনের বৈঠকে সংস্থাটি এ বিষয়ের ওপর জোর দেয়। রাজধানীর শেরে বাংলানগরের ইআরডি কার্যালয়ে ত্রিপক্ষীয় এ সভা বৃহস্পতিবার শেষ হয়। বৈঠকে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং বিশ্ব ব্যাংকের অপারেশনাল ম্যানেজার রাজশ্রী পারালকার নেতৃত্ব দেন। সভার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইআরডির একাধিক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে রোববার এসব তথ্য জানান। বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকা ও তুলনামূলক গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি চলমান প্রকল্প নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় দেশে বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। চলমান এসব প্রকল্পের সামগ্রিক অবস্থা অবহিত করতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বাস্তবায়নের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সংশিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক হতাশা প্রকাশ করেছে, এমন কয়েকটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- গ্রামীণ পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প। বিশ্বব্যাংকের ৪ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের বৈদেশিক সাহায্যের এই প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১২ সালে। তিন বছর শেষ হতে গেলেও অর্থ ছাড় হয়েছে একেবারেই কম। একই অবস্থা চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের। ছয় বছরে অর্থ ছাড় ও বাস্তবায়ন একবারেই কম। এখনো এ প্রকল্পের কার্যক্রম খুব একটা এগোইনি বলে হতাশ ঋণদানকারী সংস্থাটি।এছাড়া, সাইক্লোন সেন্টার পুর্নবাসন প্রকল্পে মনিটরিং জোরদার করতে বলা হয়েছে। মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো শক্তিশালীকরণ ও আর্থিক জবাবদিহিতা প্রকল্পকে চরম সমস্যায় জড়িত প্রকল্প বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রকল্প শুরুর পর দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও প্রতিবন্ধী ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশু শীর্ষক প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে নামমাত্র। বাস্তবায়নের শুরুতে সময় নষ্ট হওয়ার কারণে এ দেরি হয়েছে।অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, ভ্যাট ইম্প্রুভমেন্ট কর্মসূচি, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন কর্মসূচি, আরবার রেজিলেন্স প্রোগ্রাম, মিউনিসিপাল গর্ভনেন্স অ্যান্ড সার্ভিস প্রজেক্ট, প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট (৩), মর্ডান গ্রেইন স্টোরেজ ফেসিলিটিজ ও রুরাল ইলেক্ট্রিসিটি ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন।এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্বব্যাংকের সাহায্যপুষ্ট চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। মূলত দুটি বিষয় আলোচনায় স্থান পায়। বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকা প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি বাড়ানো এবং এগুলোয় অর্থ ছাড়সংক্রান্ত সমস্যা কাটিয়ে দ্রুত ছাড় নিশ্চিত করা। দু’পক্ষই প্রকল্প দ্রুত শেষ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। অর্থ ছাড় সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুতই সমাধান করবে বিশ্বব্যাংক।বর্তমানে চলমান ৩৬টি উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার সহায়তা করেছে বিশ্বব্যাংক।এমএ/এসএইচএস/এনএফ/পিআর
Advertisement