খেলাধুলা

জয়সওয়ালরা মিথ্যাবাদী, বললেন ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটার

যসশ্বী জয়সওয়াল নাকি শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ- কে সঠিক? এ প্রশ্নে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা এখন দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ কথা বলেছেন জয়সওয়ালের পক্ষে, আবার কেউ শরফুদ্দৌলার পক্ষে।

Advertisement

সুনীল-গাভাস্কার ট্রফিতে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার মেলবোর্ন টেস্টে জয়সওয়ালকে টিভি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলার আউট ঘোষণার পর থেকে বিতর্কের সূত্রপাত। ক্রিকেট মহলে গেল কয়েকদিন থেকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্র এটি।

মেলবোর্নে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ঘটনা। খেলা চলছিল পঞ্চম দিনের। শেষ সেশনে তখনো ২১.২ ওভারের খেলা বাকি। জিততে ২০০ রান দরকার হলেও ভারতের লক্ষ্য তখন ড্র করা। অন্যদিকে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ারর দরকার ৪ উইকেট।

ভারত ড্র করতে পারবে কিনা, তা নির্ভর করছিল ৮৪ রান নিয়ে ব্যাটিং করা জয়সওয়ালের ওপর। এমন সময় প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটের পেছনে অ্যালেক্স কেরের হাতে জয়সওয়ালের ক্যাচের আবেদন করে অস্ট্রেলিয়া। অনফিল্ড আম্পায়ার নটআউট দিলে রিভিউ নেন অসি অধিনায়ক কামিন্স। ফলে সিদ্ধান্ত চলে যায় তৃতীয় আম্পায়ার শরফুদ্দৌলার কাছে।

Advertisement

রিপ্লেতে দেখা যায়, বল ব্যাট ও গ্লাভস স্পর্শ করেছে এবং বলের গতি কিছুটা কমে গেছে। নিখুঁত সিদ্ধান্ত দিতে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি স্নিকোমিটারের সহায়তা চান শরফুদ্দৌলা। কিন্তু বল ব্যাটে লাগলে স্নিকোর লাইনগুলো বড় হতে দেখা গেলেও তখন সেটি দেখা যায়নি।

প্রযুক্তির তোয়াক্কা না করেই জয়সওয়ালকে আউট ঘোষণা করেন শরফুদ্দৌলা। আউটের পর অনফিল্ড আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়াতে দেখা যায় জয়সওয়ালকে। টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে তিনি যে অসন্তুষ্ট, সেটি তখন স্পষ্ট।

১৮৪ রানে ম্যাচ হারের পর ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানান, শরফুদ্দৌলা সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। তবে দেশটির সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার ও বিসিসিআইয়ের সহসভাপতি রাজীব শুক্লা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। তাদের মতো এক পক্ষের দাবি, প্রযুক্তির সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়া ঠিক হয়নি শরফুদ্দৌলার।

বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে এবার কথা বলেছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সুরিন্দর খান্না। তিনি কথা বলেছেন শরফুদ্দৌলার পক্ষে। সঙ্গে জয়সওয়ালদের কঠোর সমালোচনাও করেছেন ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত ভারতের জার্সি গায়ে ১০টি ওয়ানডে খেলা এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

Advertisement

জয়সওয়াল স্পষ্টই আউট, এখানে বিতর্কের কিছু নেই জানিয়ে ভারতীয় বার্তা সংস্থা আইএএনএসকে খান্না বলেন, ‘বিতর্ক তৈরির মতো কিছু তো ছিল না সেখানে। চারটা অ্যাঙ্গেল থেকে দেখানো হয়েছে। বলটা গ্লাভসে লেগেছে, তাতে কিছুটা গতি কমে বলটা উইকেটের পেছনে অ্যালেক্স ক্যারির হাতে জমা পড়ে।’

ভারতীয় ক্রিকেটারদের মিথ্যাবাদী বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি খান্ন। আউট হওয়ার পর আম্পায়ারে সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করা আকাশ দিপকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কিছু তির্যক মন্তব্য করেন তিনি।

খান্না বলেন, ‘আকাশ দীপও আউট হওয়ার পর একই কথা বলেছিল। এরা তো মিথ্যাবাদী। আপনাকে আগে সৎ হতে হবে, এরপরই কেবল আপনি জিততে শুরু করবেন। হাতে ব্যাট থাকলে বলা কানায় লেগেছে কি না সেটি আপনি না বুঝে পারেন কীভাবে? ঘটনা হলো আমরা বাজে খেলেছি ও হেরেছি।’

১২৩ রানে ছিল ৩ উইকেট। এরপর ১৫৫ রানে অলআউট। ভারতের এমন ব্যাটিংধস মেনে নিতে পারেননি খান্না।

জাতীয় দলে না পারলেও আইপিএলে ঠিকই রান করবে ব্যাটাররা, এমন সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ওরা কেমন ধরনের ব্যাটিং করছে? আইপিএল আসুক, দেখবেন এই খেলোয়াড়েরাই রান পাবে। আক্রমণাত্মক টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ব্যাটিং না করে ইতিবাচক খেলা উচিত। নতুন বছরে (ভারত দলের) ভাগ্য পাল্টানোর আশা করছি।’

এমএইচ/এএসএম