জাতীয়

‌‘বড় ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে আছি, বাইরে দানবীয় উল্লাস’

পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবারও বিকট শব্দে পটকা-আতশবাজি ফোটানোর বিকট শব্দে উদযাপিত হচ্ছে নতুন বছর ২০২৫। রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজি ও ফানুস উড়িয়ে ২০২৫ সালকে স্বাগত জানাচ্ছে ঢাকাবাসী।

Advertisement

ঠিক একইভাবে আতশবাজি-পটকা আর ফানুসে বরণ করেছিল ২০২২ সালকে। বিকট আতশবাজির শব্দে চার মাস বয়সী শিশু তানজীম উমায়ের প্রচণ্ড ভয় পায়। জন্মগতভাবে হৃদযন্ত্রে ছিদ্র ছিল তার। সেই থার্টি ফার্স্টে মধ্যরাতে টানা আতশবাজির বিকট শব্দে ভয় পেয়ে বারবার কেঁপে উঠছিল শিশুটি। এরমধ্যে শুরু হয় শ্বাসকষ্টও।

কোনোমতে রাত পার করে পরদিন তাকে ভর্তি করা হয় হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। সেখান থেকে প্রথমে আইসিইউ, পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তবে সব চেষ্টা ব্যর্থ করে সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যায় মাত্র চার মাস বয়সী শিশু উমায়ের।

তিন বছর আগের সেই রাতের কথা ভোলেননি উমায়েরের বাবা ইউসুফ সরকার। চার মাস বয়সী নিজের সন্তানকে হারিয়ে তিন বছর পর আবারও আতঙ্কে আছেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুনথার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজির শব্দে কাঁপছিল উমায়ের, পরদিনই মৃত্যু এবারও আইন অমান্য করে মুহুর্মুহু আতশবাজি-পটকায় নতুন বছর উদযাপন 

এবারের আতশবাজি-পটকার আওয়াজে আতঙ্ক আর ঘৃণায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একাধিক পোস্ট করেছেন ইউসুফ সরকার। এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘বড় ছেলেটাকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে আছি।আর বাইরে চলছে দানবীয় উল্লাস!প্রচণ্ড ঘৃণা হচ্ছে এই প্রজন্মের ওপর।আহ! যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে।’

২০২২ সালে উমায়েরের বাবা ইউসুফ রায়হান জাগো নিউজকে বলেন, আতশবাজির বিকট শব্দে ছেলেটা বারবার কেঁপে উঠছিল। তার সামনে গেলেই ভয়ে আঁতকে উঠছিল, দূরে সরে যাচ্ছিল। সারা রাত আতঙ্কে কাটে তার, শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল। বিকট শব্দের এক পর্যায়ে আমি ও আমার স্ত্রী আমাদের ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরি। তার বুকে মাথা রাখি। ছেলেটা তখনো স্বাভাবিক হচ্ছিল না। কে জানতো, পরের দিনই আমাদের ছেড়ে যাবে।

তিনি বলেন, আমার বাবু মায়ের পেট থেকেই হৃদযন্ত্রে ছিদ্র নিয়ে এসেছিল। প্রথমে রোগ ধরতে না পারলেও আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে তার টেস্ট করাই। অবশেষে রোগ শনাক্ত করতে পেরে চিকিৎসকরা ফেব্রুয়ারিতে তার অপারেশনের ডেট দেন।

২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি তাকে ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। তার আগেই চলে যায় শিশু উমায়ের।

Advertisement

টিটি/কেএসআর