বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হওয়ার পর থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত ক্রীড়াঙ্গনে একচ্ছত্র জনপ্রিয়তা ছিল ফুটবলের। তখনকার সময়ের জনপ্রিয় ফুটবলার একরামুল বাশার তুহিন। ঢাকার জনপ্রিয় ক্লাব মোহামেডানের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। পরিচয় তার আরও একটি আছে, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সফল অধিনায়ক ও বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনের বড় ভাই তিনি। আজ সেই ফুটবল তারকা দুরারোগ্য মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। আর তাই তার জন্য সাহায্য এবং দোয়া চাইলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা।রোববার দুপুরে রাজধানীর লালমাটিয়ায় সুমনের বাসায় একরামুল বাশার তুহিনকে দেখতে যান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের রঙ্গিন ও সাদা জার্সির দুই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মুশফিকুর রহিম। এসময় তাদের সঙ্গে ছিলেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল ও পোস্টারবয় তাসকিন আহমেদ। বাসায় গিয়ে তারা ফুটবলার তুহিনের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী হবার পরামর্শ দেন।তুহিনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ক্রিকেট তারকারা। এ সময় মাশরাফি বলেন, ‘সুমন ভাই আমাদের অধিনায়ক ছিলেন, তাই উনার বড় ভাই আমাদেরও বড় ভাইয়ে মত। একরামুল বাশার তুহিন ভাই ক্যান্সারের কষ্ট পাচ্ছেন। সবারই আসার কথা ছিল; কিন্তু অনুশীলনের জন্য আসতে পারে নাই। আমরা আসলে উনাকে সমবেদনা জানানোর জন্য, বলতে পারেন পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য এখানে (বাসায়) এসেছি। আমাদের একটা অনুরোধ, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, ফুটবল ফেডারেশন, অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনসহ সমাজে যারা বড় বড় অবস্থানে আছেন সবাই কম বেশি যা পারেন তা দিয়ে তাকে সহয়তা করবেন। এই সময় মানুষ একটু সমবেদনা চায়, আমার বিশ্বাস আপনারা উনার পাশে এসে দাঁড়ালে উনি একটু সাহস পাবেন।’মোহামেডান ক্লাবকে উদ্দেশ্য করে মাশরাফি যোগ করে আরও বলেন, ‘উনি প্রায় পাঁচ-ছয় বছর মোহামেডান ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। তাই আশা করবো মোহামেডান ক্লাব উনার পাশে এসে দাঁড়াবে। কারণ মোহামেডান এ ধরনের অনেক ভালো ভালো কাজই করে।’এ প্রসঙ্গে তামিম ইকবাল বলেন, ‘খেলা বাংলাদেশের সবার জন্য আনন্দ বয়ে আনে। আর একজন খেলোয়াড় কষ্ট করছে তাই আমি এটাই অনুরোধ করবো যে ছোট বড় যতটুকুই পারি তা দিয়ে যদি উনার জীবনে আবার আনন্দ ফিরিয়ে আনতে পারি তাহলে আমি নিশ্চিত এর চেয়ে বেশি তৃপ্তির কিছুই হবে না। তাই আমাদের সবার তরফ থেকে অনুরোধ যে, আপনারা সবাই যদি একটু কিছু সাহায্য করেন তাহলে এটাই উনার পরিবারের জন্য অনেক বড় সাহায্য হয়ে দাঁড়াবে।’ঢাকার ফুটবলে ইস্টঅ্যান্ড ক্লাব দিয়ে অভিষেক তুহিনের। খেলতেন গোলরক্ষক পজিশনে। ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত খেলেছেন বাংলাদেশেরর অন্যতম জনপ্রিয় ক্লাব মোহামেডানে। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরেও মোহামেডানের হয়ে এশিয়ান ক্লাব কাপে খেলেছেন তিনি। যদিও তখনকার অন্যতম সেরা গোলরক্ষক সাঈদ হোসেন কাননের জন্য খুব বেশি ম্যাচ খেলা হয়নি তার। এরপর আরেক ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আরামবাগেও দীর্ঘদিন খেলেছেন তিনি। তুহিনের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করে মুশফিক বলেন, ‘সবাই যদি এ সময় কিছু সাহায্য করতে পারি, তাহলে আমি মনে করি যে কোন কিছুই সম্ভব। আর আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া চাইবো। অবশ্যই চেষ্টা করবো যাদের সামর্থ্য আছে তারা যেন পাশে দাঁড়াই। আর আমরাও আছি, চেষ্টা করবো তাকে সাহায্য করার। ইনশাল্লাহ তিনি সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন।’পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত সাবেক এ ফুটবলাররে জন্য সাহায্য চেয়ে তাসকিন আহমেদ বলেন, ‘এ মুহূর্তে যারা বড় বড় মানুষ ও প্রতিষ্ঠান আছে, তাদের এখন উনার পাশে থাকা উচিত। একসময় তিনি খেলার জন্য অনেক কিছু করেছেন। আর আমরাও আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো তাকে সাহায্য করার।’আরটি/আইএইচএস/এবিএস
Advertisement