ঘুস লেনদেনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে বনানী থানায় করা মামলা পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
আক্তার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ২০১২ সালে বনানী থানার মামলা করা হয়। দুই বছর পর মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন হয়েছিল। সেটি আবার পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (নদী শাসন) কাজী মো. ফেরদাউস, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রিয়াজ আহমেদ জাবের, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালটেন্ট লিমিটেডের (ইপিসি) পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, এসএনসি নাভালিন ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্চের সাবেক পরিচালক রমেশ শাহ ও সাবেক সহ-সভাপতি কেভিন ওয়ালেস একে অন্যকে আর্থিক লাভবান করার অসৎ উদ্দেশে ঘুস লেনদেনের মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণকাজে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্মাণ তদারকি পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত দরপত্রের অন্যতম দরদাতাকে কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন।
Advertisement
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্তে তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ার কারণে তখন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছিল। এখন পদ্মা সেতুর অনিয়ম নিয়ে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। এ কারণে মামলাটি পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণকাজে দুর্নীতি ও ঘুস লেনদেনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তৎকালীন দুদকের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল জাহিদ ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় এ মামলা করেন। যেখানে সাতজনকে আসামি করা হয়। দেড় বছরের বেশি সময় তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতি দেয় দুদক। যা ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আদালত গ্রহণ করে। দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক মীর্জা জাহিদুল আলমের নেতৃত্বাধীন একটি টিম এ মামলাটি তদন্ত করে।
পদ্মা সেতু দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলার এজাহারে সন্দেহভাজনের তালিকায় ছিলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও প্রাক্তন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। মামলাটির এফআরটির মাধ্যমে তারাও এ অভিযোগ থেকে রেহাই পান।
ওই মামলার এফআরটির বিষয়ে তৎকালীন দুদক চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান জানিয়েছিলেন, ওই মামলাটি ছিল দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলা। তদন্তে আরও তথ্য পাওয়ার আশায় আমরা মামলা দায়ের করি। তদন্তকালে দেশে এবং কানাডায় গিয়ে দুদকের তদন্ত দল অভিযান চালায়। দুদক টিম কানাডায় গিয়ে কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করে।
Advertisement
বিশ্বব্যাংকের আশ্বাসের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হলেও মামলা প্রমাণের জন্য দাতা সংস্থা ও কানাডা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত মামলা থেকে আসামিদের অব্যাহতির (এফআরটি) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, জানান তিনি।
এসএম/এমকেআর/এমএস