গাইবান্ধায় শীতকালীন সবজির ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে। সব ধরনের শীতকালীন সবজি দিয়ে ভরপুর বাজার। তবে সবজির বিক্রি ও দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কমেছে অনেক।
Advertisement
দুই সপ্তাহ আগে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় কাঁচামরিচ বিক্রি হলেও এখন ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ২০০ টাকার পেঁয়াজ ৪০ টাকা, ১৫০ টাকার আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি বাজারে সব ধরনের শীতের সবজির দামও কমেছে।
শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে শীতের সবজিতে ভরে গেছে। বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজিতে বাজারগুলো সেজেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাকায় সবজির উৎপাদন এবং সরবরাহ বেশি থাকায় সব ধরনের সবজির মূল্য সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। কয়েকদিন ধরে শীত কিছুটা কম অনুভূত হলেও শীতের সবজির ফলন আশাতীত।
Advertisement
এলাকায় সবজির ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে শীতকালীন সবজির মূল্য কমতে শুরু করেছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজার সরজমিনে ঘুরে এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সব ধরনের সবজির সরবরাহ রয়েছে।
বাজারে বাঁধাকপি ৫-৭ টাকা, ফুলকপি ৩-৫ টাকা, শিম ৩০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পেঁয়াজ দেশি ৩৫- ৪০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, দেশি টমেটো ২০ টাকা, মূলা ৫ টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও গাজর ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লালশাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আড়তদার আবদুর ওয়াহেদ মিয়া বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায়। সবজির ব্যাপক উৎপাদন হয়েছে চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ। যারা বাজারে সবজি বিক্রি করতে আসছেন তারা হতাশ হয়েছে।
Advertisement
শহরের পুরাতন বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. শিপন সরকার বলেন, এলাকায় সবজি উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি। যে কারণে প্রতিদিন সবজির দাম হ্রাস পাচ্ছে। শীতের সবজি দিয়ে বাজার ভরপুর।
বাজারের আড়তদার শামছুজোহা সরকার বলেন, শীতকালীন সবজি দিয়ে বাজার ভরে গেছে। সবজির দাম নেই বললেই চলে। ফুলকপি ৩ টাকায় কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যান্য সবজির দামও সস্তা।
চাষি জুল্লু মিয়া বলেন, বাজারে সবজি নিয়ে বিপাকে পড়ে গেছি। ফুলকপি নিয়ে এসে খাজনা আর ভাড়ার দামও তুলতে পারব না। অনেকেই দাম বলছে না। এবার সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতিতে পড়তে হবে।
আরেক চাষি সেরাজুল ইসলাম বলেন, চড়া দামে বীজ-সার কিনে সবজির আবাদ করে এমন ক্ষতিতে পড়তে হবে তা জানতাম না।
বাজারে আসা ক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখন শীতের সবজির মূল্য নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের মধ্যে রয়েছে। আমরা চাই পুরো শীতকাল জুড়ে শীতের সবজির মূল্য এমন থাকুক। অন্যদিকে চালের মৌসুমে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া মাছ, ডিমসহ সব ধরনের মাংস, তেল ও মসলার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, এবার জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। সবজি পুরোদমে উঠা শুরু হওয়ার কারণে চাষিরা সবজির দাম পাচ্ছে না।
এএইচ শামীম/আরএইচ/জিকেএস