ফিচার

২১ ঘণ্টা জেগে থাকে তারা

সেই কাক ডাকা ভোরে ডিউটি শুরু হয়। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। এর মধ্যেই গোসল আর খাওয়া দাওয়া। সপ্তাহে একদিনও ছুটি নেই তাদের। ঘুমানোর সময় পায় মাত্র ৪ ঘণ্টা। সকাল ৬টায় ডিউটিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয় সেই ভোর ৫টা থেকে। রাত ১২টায় ডিউটি শেষ হলেও গাড়ি গ্যারেজ করার পর খাওয়া দাওয়া করতে বেজে যায় রাত ২টা। এভাবেই প্রতিটি দিন কাটছে তাদের।তাই সময় ও সুযোগ পেলেই একটু ঘুমানোর চেষ্টা করে তারা। এরা হলো, খলিল (৮) ও হাসান (৬)।রোববার মহাখালী থেকে বাড্ডা লিঙ্করোড আসার জন্য একটি লেগুনার সামনে ড্রাইভারের পাশে বসার সুযোগ হয় আমার। গুলশান পার হওয়ার পর লেগুনার চালক পেছনে থাকা খলিল ও হাসানকে ডাকতে শুরু করেন। অনেকক্ষণ ডাকার পরও তাদের কোনো সাড়া না পাওয়ায় কৌতুহল নিয়ে আমি পেছনে ঘুরে তাকাই। দেখি তারা সিটের উপর ঘুমিয়ে পড়েছে।তাদের ঘুমানো দেখে ড্রাইভার হৃদয় বললেন, এইটুকু বয়সে আর কত খাটবে তারা। প্রতিদিন ঝুলতে ঝুলতে জীবন শেষ তাদের।তিনি জানালেন, হাসান ৬ মাস ধরে আছে। খলিল কিছুদিন হলো নতুন এসেছে। এমনিতেও গরম। তার উপর আবার যাত্রীদের সঙ্গে বকবক করা। আমরা গাড়িতে সাধারণত ছোট বাচ্চাদের কাজে নেই এ কারণে যে, তাদের কাজের গতি খুব। সেই সঙ্গে বেতনও বেশি দিতে হয়না তাদের। আর তারা অসুস্থও কম হয়।হৃদয় জানান, এইটুকু বয়সে তারা যে খাটতে পারে। আমি নিজেও তাদের মতো পারিনা। তাদের কাজে নিলেও কষ্ট লাগে, না নিলেও কষ্ট লাগে। তবে তারা লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহী না বলে জানালেন হৃদয়।তিনি বললেন, আমি তাদের অনেকবার বলেছি তোরা পড়ালেখা করতে চাইলে আমি স্কুলে ভর্তি করে দেব। কিন্তু তারা কথা শোনে না।হৃদয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই হাজির হয়ে গেলাম লিঙ্ক রোডে। তখনও ঘুমের রাজ্যে ছিল খলিল ও হাসান।এমএএস/এবিএস

Advertisement