আন্তর্জাতিক

আজারবাইজানে বিমান বিধ্বস্ত, রাশিয়াকে দুষছে যুক্তরাষ্ট্র

সম্প্রতি আজারবাইনে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩৮ জন নিহত হয়েছে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ‌‘প্রাথমিক তথ্য’ থেকে যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, গত ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে রাশিয়াই দায়ী হতে পারে।

Advertisement

তবে জন কিরবি এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটি তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে।

বিমানটি রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের গুলির শিকার হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিধ্বস্ত হওয়ার আগে এটি চেচনিয়ায় অবতরণের চেষ্টা করেছিল।

ক্রেমলিন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে রাশিয়ার সিভিল এভিয়েশন এজেন্সি বলেছে যে, ইউক্রেনের ড্রোন হামলার কারণে চেচনিয়ার পরিস্থিতি ‘অত্যন্ত জটিল’ হয়ে উঠেছে।

Advertisement

জন কিরবিকে উদ্ধৃত করে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানটির যেসব ছবি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে তার চেয়ে বেশি ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্রের চোখে ধরা পড়েছে। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজারবাইজান মনে করে ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের কারণে বিমানটির জিপিএস সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর এতে রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম থেকে আসা গুলি বা এ জাতীয় কিছুর আঘাত লাগে।

আজারবাইজান রাশিয়াকে দায়ী করেনি। তবে দেশটির পরিবহন মন্ত্রী রাশাদ নাবিয়েভ বলেছেন, বিমানটি ‌‘বাইরের হস্তক্ষেপে’র শিকার হয়েছে এবং অবতরণের সময় আক্রান্ত হয়েছে।

প্রায় সবাই যারা বেঁচে ফিরেছে তারা জানিয়েছে, বিমানটি যখন গ্রোজনির ওপর ছিল তখন তারা তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছে। নাবিয়েভ বলেন, তদন্তকারীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবেন কোন ধরনের অস্ত্র বা রকেট ব্যবহার করা হয়েছিল।

দেশটির সরকারপন্থি এমপি রাশিম মুসাবেকভ বলেছেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে গ্রোজনির আকাশে বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে এ বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করা অসম্ভব।

Advertisement

বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পাইলটকে গ্রোজনিতে জরুরি অবতরণ করতে বলা হয়েছে। নিকটবর্তী বিমানবন্দরগুলোর পরিবর্তে বিমানটিকে কোনো জিপিএস সুবিধা ছাড়া দূরে কাস্পিয়ান সাগরের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল।

ফ্লাইট সহকারী জুলফুকার আসাদভ চেচনিয়ার আকাশে থাকার সময় ‘বাইরের হামলার মতো কিছুতে’ আক্রান্ত হওয়ার সময়ের বর্ণনা দিয়েছেন। এর প্রভাবে বিমানের ভেতরে আতঙ্ক তৈরি হয়। আমরা সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করেছি। তাদের নিজ আসনে বসিয়েছি। ওই সময় আরেকটি হামলা হলো এবং আমার বাহুতে আঘাত লাগে। এমব্রায়ের ১৯০ মডেলের বিমানটির পাইলটদের প্রশংসা করা হচ্ছে, কারণ ২৯ জন যাত্রীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে রাশিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম থেকে হামলার কারণেই বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর প্রকাশ হলেও ক্রেমলিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, এই বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলমান আছে এবং তদন্তের ফল না আসা পর্যন্ত আমরা কোনো মূল্যায়ণের বিষয় বিবেচনা করি না।

আরও পড়ুন:  কাজাখস্তানে প্লেন দুর্ঘটনায় ৩২ জন জীবিত উদ্ধার ৬৭ আরোহী নিয়ে কাজাখস্তানে যাত্রীবাহী প্লেন বিধ্বস্ত ব্রাজিলের পর্যটন শহরে প্লেন বিধ্বস্ত, নিহত ১০

অপরদিকে কাজাখ কর্তৃপক্ষ আহতদের চিকিৎসা করছে এবং তদন্তের বিষয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। বাকু থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, এই দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য রাশিয়া ও কাজাখস্তান কমনওয়েলথ অব ইনডেপেনডেন্ট স্টেটস বা সিআইএস থেকে একটি কমিটির প্রস্তাব করেছে।

টিটিএন