ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, প্রতিবাদের নামে চাকরির নিয়ম লঙ্ঘনকারী আমলাদের পাশাপাশি আগের শাসনামলের দুর্নীতিবাজ আমলাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Advertisement
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আজও আমরা এ বিষয়ে একটি বৈঠক করেছি। আগামী সপ্তাহে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবাদের নামে চাকরির নিয়ম লঙ্ঘনকারী আমলাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ ২০২৪-এর প্রথম দিনের সমাপনী অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।
আগের সরকারের আমলের আমলাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘বিভিন্নভাবে লুকিয়ে থাকা আগের সরকারের শাসনামলের আমলাদের আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Advertisement
উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা আমলাদের কাছ থেকে বিবৃতি শুনছি। তারা এক ধরনের হুমকি দিচ্ছে। পূর্ববর্তী শাসনামলে তারা এই ধৃষ্টতা অর্জন করেছিল যখন আমরা আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য আমলাতন্ত্রকে শক্তিশালী হতে দেখেছি’।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমলাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, এটা জনগণের সেবা করা এবং একটি সঠিক গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সমর্থন করার সময়। প্রতিবাদ নিয়ে খেলা বা গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষার জন্য এত প্রাণ বিসর্জন দেওয়া হয়নি।’
‘সংস্কার বাস্তবায়ন হলে সবাই ন্যায়বিচার পাবে। আমলারাও এই সংস্কারে একটি কণ্ঠস্বর থাকবে এবং তাদের মতামত শোনা হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘তবে, সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়ার পরে তারা যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, সেটা নৈতিক বা আইনগতভাবে ন্যায়সঙ্গত ছিল না। তারা সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করেছে’।
নাহিদ ইসলাম সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ইতিবাচক সম্প্রীতি ও ঐকমত্যের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘একই সঙ্গে তারা সরকারের ভুল ও সীমাবদ্ধতার সমালোচনা করছে। আমরা সেই বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করছি।’
Advertisement
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পর সরকার গঠনের ধরন পরিষ্কারভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়নি। এক অর্থে, এটি একটি সাংবিধানিক সরকার নয় আবার অন্য অর্থে এটি একটি বিপ্লবী সরকারও নয়। অন্তর্বর্তী সরকার একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।’
আরও পড়ুন:
সচিবালয়ে সাংবাদিকসহ বেসরকারি সবার ‘প্রবেশ পাস’ বাতিল নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা তদন্ত চলছে: ফায়ারের ডিজি ঐক্যবিহীন সংস্কার বা সংস্কারবিহীন নির্বাচনে দেশ এগোতে পারবে নাঅন্তর্বর্তী সরকার গঠনকালে অভ্যুত্থানকালীন এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে যে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছিল তা ধরে রাখার প্রত্যাশা করে নাহিদ বলেন, ‘আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি কারণ গত ১৫ বছর ধরে রাজপথে সংগ্রামের মাধ্যমে সংস্কারের ধারণা এসেছে। যা সব রাজনৈতিক দল এবং দেশবাসীও উপলব্ধি করেছে’।
তিনি আরও বলেন, এভাবেই আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে টেকসই বৈদেশিক নীতির পাশাপাশি অর্থনীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে ক্রান্তিকাল কাটিয়ে উঠতে পারি।
সৈয়দ আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটির চেয়ারপারসন রোকসানা খন্দকার, মানবাধিকার কর্মী ইলিরা দেওয়ান, অ্যাডভোকেট দিলরুবা শারমিন, গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ আহমেদ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সূত্র: বাসস
এসএনআর/এমএস