আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তী আয়াতগুলোতে আহলে কিতাবিদের মন্দ চরিত্রের লোকদের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন। অতপর তাদের মধ্যে কিছু সৎ ও উন্নত চরিত্রের লোক ছিল তাদের বর্ণনা ও গুণাবলী তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন-‘আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা তাকে (ধর্মগ্রন্থ) যথাযথভাবে পাঠ করে। তারা তার ওপর সাচ্চা দিলে ঈমান আনে। আর যারা তার সাথে কুফরি নীতি অবলম্বন করে তারাই প্রকৃতপক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১২১)এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা আহলে কিতাবের সৎ ও উন্নত চরিত্রের লোকদের কর্মকাণ্ড, গুণাবলী ও তারা যে মুমিন ছিলেন তা তুলে ধরেছেন। এদের মধ্যে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালামসহ আরো কয়েকজন ছিলেন। ইয়াহুদিদের মধ্য থেকে তাদেরেই ইসলাম গ্রহণ করার তাওফিক হয়েছিল।আহলে কিতাবের সৎ লোকদের গুণাবলীর-ক. তারা অত্যাধিক একাগ্রতা ও মনোযোগের সঙ্গে তাদের ধর্মগ্রন্থ পড়তো এবং জান্নাতের কথা আসলে আল্লাহর কাছে জান্নাত কামনা এবং জাহান্নামের কথা আসলে জাহান্নাম থেকে আশ্রয় লাভের দোয়া করতো।খ. হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম বলে স্বীকার করতো। এ বিধানে কোনো বিকৃতি তারা ঘটায়নি।গ. তাদের ধর্মগ্রন্থে যা লিখা ছিল তার সবকিছুই মানুষের কাছে প্রচার করতো। এর মধ্য থেকে কোনো কিছুই গোপন করতো না।ঘ. তাদের ধর্মগ্রন্থের স্পষ্ট আয়াতের উপর আমল করার পাশাপাশি অস্পষ্ট আয়তের ওপর ঈমান আনা এবং বুঝে না আসা বিষয়গুলো তাদের আলেমদের নিকট থেকে বুঝে তার ওপর আমল করতো।অতপর যারা তাদের (ইয়াহুদি) ধর্মগ্রন্থকে মানবে না এবং বিশ্বনবির উপর ঈমান আনবে না তারাই হবে ক্ষতিগ্রস্ত।তাফসিরে জালালাইনে এ আয়াতে ব্যাখ্যায় এসেছে, ’৪০ জন লোকের একটি প্রতিনিধি দল বিশ্বনবির দরবারে উপস্থিত হয়। তন্মধ্যে ৩২ জন ছিলেন হাবশার অধিবাসী আর ৮ জন সিরিয়ার পাদ্রীদের মধ্য থেকে ছিলেন। এ দলটি হজরত জাফর ইবনে আবি তালিবের নেতৃত্বে এসেছিলেন। যিনি হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু আপন ভাই ছিলেন। তারা সকলেই ইসলাম গ্রহণ করেছেন। এ লোকদের উদ্দেশ্যে এ আয়াত নাজিল হয়।সর্বোপরি আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন বুঝা, কুরআন মানা এবং কুরআনের সমাজ গড়ার পাশাপাশি রিসালাতের সাক্ষ্য ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে তাঁর নৈকট্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন। এমএমএস/এমএস
Advertisement