আইন-আদালত

হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে দিল্লিকে চিঠি, যা বললেন চিফ প্রসিকিউটর

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে বাংলাদেশ সরকারের চিঠি দেওয়াকে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

Advertisement

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের প্রশ্নে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্র তার কাজ করেছে।

তিনি বলেন, আমি তো এই রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ করছি। আমাদের রিকোয়েস্টের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সেই ব্যবস্থা নিয়েছে। সুতরাং এই বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সরকার নোট ভারবাল দিয়েছে, কূটতৈনিক চ্যানেলে তাকে ফেরত পাওয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ। আমরা চাইবো, সরকার এ কাজের মাধ্যমে সফল হয়ে তাকে যদি ফেরত আনতে পারে, তাহলে বিচারটা আরও ভালোভাবে করা সম্ভব হবে।

এর আগে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আমরা জানিয়েছি ভারতকে, তাকে (শেখ হাসিনা) যে ফেরত চাওয়া হচ্ছে, সেটা বিচার ব্যবস্থার জন্য, আমরা সেটা জানিয়েছি। কূটনৈতিকপত্রের মাধ্যমে ভারত সরকারকে জানানো হয়েছে। পরে বার্তাসংস্থা এএনআই জানায়, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের পাঠানো চিঠি পেয়েছে।

Advertisement

একই দিন সকালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ভারত থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানোর কথা জানান।

আরও পড়ুন: হাসিনাকে ফেরত চেয়ে চিঠি: ভারতের এখনো কোনো উত্তর মেলেনি হাসিনাকে প্রত্যর্পণের চিঠি প্রসঙ্গে যা বললেন মহেশ সাচদেব

তিনি বলেন, এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি পাঠিয়েছি। (তাকে) এক্সট্রাডিশন (প্রত্যর্পণ) করার জন্য, এটি প্রক্রিয়াধীন।

কোন উপায়ে শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনা হবে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সঙ্গে ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার আগে-পরে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং তার দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও পালিয়ে যান।

Advertisement

অভ্যুত্থান দমনে ব্যাপক বলপ্রয়োগ করে শেখ হাসিনার সরকার। এতে সরকারি হিসাবেই প্রায় ৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। আর আন্দোলনকারীদের হিসাবে এ সংখ্যা দেড় হাজারের বেশি।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এই সরকার শেখ হাসিনাসহ অভ্যুত্থানে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের বিচার করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে। এরই মধ্যে সেই ট্রাইব্যুনালে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে।

সরকারের উপদেষ্টা ও কর্মকর্তারা অনেক আগে থেকে বলে আসছেন, এসব মামলায় বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে ভারতের কাছে।

এফএইচ/এসএনআর/এএসএম