সিরাজগঞ্জে চলতি আমন মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তরের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত সংগ্রহ শুরুর ৩৫ দিনে জেলার ৬টি গুদামে একমুঠো ধানও সংগ্রহ হয়নি। বাকি তিনটি গুদামে মাত্র এক দশমিক ৫৫ শতাংশ ধান সংগ্রহ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর। এ সময়ে চাল সংগ্রহ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৪০ শতাংশ।
Advertisement
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর থেকে ৩৩ টাকা কেজি দরে ধান ও ৪৭ টাকা দরে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ শুরু করে সরকার। যার পরিপ্রেক্ষিতে জেলার ৯টি খাদ্যগুদামে ৫ হাজার ৪৩৩ টন ধান ও ৮ হাজার ৯৮ দশমিক ৬৮০ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এ সংগ্রহ অভিযান আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে। তবে এখন পর্যন্ত জেলায় এক দশমিক ৫৫ শতাংশ ধান ও চাল সংগ্রহ হয়েছে ৪০ শতাংশ।
ধান-চাল সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারি সংগ্রহ মূল্যের তুলনায় বাজারদর বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরকারের কাছে ধান বিক্রিতে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। লাইসেন্স রক্ষায় কিছু চালকল মালিক খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে চাল বিক্রি করলেও অনেক চালকল মালিক চুক্তির বাইরে রয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খাদ্য গুদামে গেলে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাজ না থাকায় অলস সময় পার করছেন। কথা হয় শ্রমিক জহুরুল ইসলাম ও নান্নু সেখের সঙ্গে। তারা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ২৮ জন শ্রমিক এই গুদামে কাজ করি। আমাদের টন প্রতি ১৪ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। বর্তমানে ধান-চাল সংগ্রহ চলছে। তবে কিছু চালকল মালিক গুদামে চাল দিলেও কৃষকরা ধান দিচ্ছেন না। যে কারণে আমাদের অলস সময় পার করতে হচ্ছে।
Advertisement
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, লক্ষ্যমাত্রার ৮৭৬ টন ধান সংগ্রহের বিপরীতে এখন পর্যন্ত তিন টন ধান ও ৬৭৮ টন চালের বিপরীতে ২৬৭ দশমিক ৫৪০ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে।
শ্যামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মমিন জানান, সরকার ঘোষিত মূল্যের চেয়ে বাজারে আমন ধানের মূল্য বেশি পাওয়ায় তিনি সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করছেন না। তবে আগামীতে ধানের মূল্য বাজারের চেয়ে একটু বেশি হলে খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করবেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জাগো নিউজকে বলেন, জেলায় ৩৯১টি চালকল রয়েছে। এরমধ্যে ২৮৫ চালকল মালিক আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ শতাংশ চাল সংগ্রহ করেছি। কিন্তু ধান সংগ্রহ খুবই কম। তবুও আমরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করছি।
এম এ মালেক/জেডএইচ/জেআইএম
Advertisement