বিশেষ প্রতিবেদন

প্রগতি সরণির খোঁড়াখুঁড়িতে জনদুর্ভোগ চরমে

অসহনীয় যানজট আর দুর্ভোগের অপর নাম যেন রাজধানীর কুড়িলের প্রগতি সরণি। যে রাস্তার ওপর ইট-বালু রেখে অর্ধেক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগেই আছে। বাধ্য হয়ে উল্টো লেন ব্যবহার করছেন গাড়ি চালকরা। এজন্য দুর্ভোগের মাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। রামপুরা থেকে কুড়িলের দিকে যাওয়ার রাস্তায়ও বসে থাকতে হচ্ছে লম্বা সময়। রাস্তা যেন শেষই হয় না!শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, রামপুরা থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার পর্যন্ত সড়কের নতুন বাজার থেকে সুবাস্তু নজর ভ্যালির রাস্তার পূর্ব লেনের অর্ধেক অংশ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এজন্য যানজটের হাত থেকে বাঁচতে পশ্চিম পাশের লেন ব্যবহার করে যানবাহন কুড়িল থেকে রামপুরার দিকে যাচ্ছে। এতে রাস্তার দুই পাশেই ব্যাপক জটলার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভাঙাচোরা রাস্তা ও ছোট বড় গর্তের কারণে দুর্ঘটনার ঘটনাও নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।রাস্তায় বৃষ্টির পানির জলাবদ্ধকার কারণে গর্ত কতটুকু তা বুঝা যায় না। মধ্যবাড্ডা ফ্লাইওভারের নিচে ভাঙা ও গর্ত তুলনামূলক বেশি। যাত্রাপথে গাড়ি আটকে গিয়ে বেকায়দায় পড়তে দেখা গেল এক গণ-পরিবহনকে। নাম ‘তুরাগ’ পরিবহন।গর্তে আটকে পড়া এ গাড়ির ড্রাইভার শফিক বলেন, সারা বছর বসে থেকে বৃষ্টির দিনে খোঁড়াখুঁড়ি। কি আর বলবো? একদিন দুই দিন না। দুই মাস থেকে এই জ্বালায় আছি। কবে যে কাজ শেষ হবে আল্লাই জানে।  জানা গেছে, প্রায় দেড় মাস ধরে লেনের অর্ধেক অংশ বন্ধ রেখে এই কাজ চলছে। এ কারণে গাড়ি চলাচলে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা তীব্র যানজটে আটকে থাকছে শত শত যানবাহন। এর রেশ ছড়িয়ে পড়ছে পুরো সড়কজুড়ে। রামপুরা ব্রিজ থেকে কুড়িল পর্যন্ত এ যানজট বিস্তৃত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এ পথে যাতায়াতকারীরা।সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রগতি সরণিতে রাস্তার দুই পাশে ঢাকা ওয়াসার তৈরি দীর্ঘ দিনের ড্রেন মাটি-বালুর স্তর পড়ে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কয়েক বছর ধরে ওই এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছেন। এছাড়া ড্রেন বন্ধ থাকায় সুয়ারেজের ময়লা পানিও রাস্তার ওপরে উঠে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে।ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক নিজ উদ্যোগে এই ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু দেড় মাস আগে শুরু হওয়া এই ড্রেন নির্মাণকাজ খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। ফলে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আরো কিছু এমন দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য হতে হবে বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আকতার হোসেন বলেন, ‘ভাই উন্নয়ন চাইলে একটু কষ্ট পোহাতে হবেই। কিন্তু এর মানে এই না, এক মাসের কাজ তিন মাস ধরে চলবে! একটি ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন মেয়র সাহেব। এখন উচিত দ্রুত কাজ শেষ করতে তদারকি করা।’ড্রেনের কাজ ঢিলেতালে চলছে স্বীকার করে শ্রমিক রাজু বলেন, ‘ভারি বৃষ্টির কারণে কাজ একটু সুলু (ধীর) হয়ে পড়েছে। কিন্তু কাজ অইতাছে (হচ্ছে) না- তা না।’ তিনি জানালেন, অনেক গভীর ও মোটা পাইপ দিয়ে এ ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। এ জন্য রাস্তার পূর্ব দিকের লেনের মূল রাস্তার অর্ধেক অংশে গভীর গর্ত তৈরি করা হয়। তাই রাস্তার এ অংশ সীমানা টেনে বন্ধ রাখা হয়েছে। মূল রাস্তায় অংশের পাইপ বসানোর পর এখন বালু ফেলা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শেষ হবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে  ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম জাগো নিউজকে বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সুবাস্তু থেকে বাঁশখালী পর্যন্ত সংস্কার কাজ শেষ হবে।তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারি বৃষ্টির কারণে কাজে কিছুটা বিঘ্ন হয়েছে।এমএ/এসএইচএস/এআরএস/আরআইপি

Advertisement