প্রবাস

মালাক্কা আন্তর্জাতিক হালাল ফেস্টিভালে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মালাক্কা প্রদেশে চলছে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক হালাল ফেস্টিভাল। ফেস্টিভালে খাদ্য ও পানীয় হালাল ফ্যাশন, হালাল ট্যুরিজমসহ মোট ৯টি ক্লাস্টারে ২৫০টি বুথের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের ১০টি দেশ এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।

Advertisement

মালাক্কা প্রাদেশিক সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করে। ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মালাক্কা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএবি দাতুক সেরি উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ। ২১ ডিসেম্বর এ আসরের উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকদের বিশেষ আমন্ত্রণে যোগদান করেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।

এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মালাক্কার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইবি দাতুক সুলাইমান মো. আলী, প্রাদেশিক আইনসভার স্পিকার ওয়াইবি দাতুক ওয়াইরা ইব্রাহিম দুরুম, শিক্ষা ও ধর্মবিষয়ক প্রাদেশিক এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল ওয়াইবি দাতুক সেরি উতামা রহমান বিন মারিমান এবং মালাক্কা প্রাদেশিক সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মেলায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় বরাদ্দ করা বুথে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ‘মৈত্রী’ এই মেলায় অংশগ্রহণ করে এবং তাদের বিভিন্ন ধরনের খাদ্য ও পানীয় পণ্যসামগ্রী প্রদর্শনী করে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অন্যান্য স্টলের পাশাপাশি বাংলাদেশের স্টল পরিদর্শন করেন মালাক্কা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএবি দাতুক সেরি উতামা এবি রউফ বিন ইউসুহ।

Advertisement

এ সময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তাকে স্বাগত জানান এবং বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য বিভিন্ন পণ্য সম্পর্কে তাকে অবহিত করে হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে তার সহযোগিতা প্রত্যাশী করেন। পরিদর্শন শেষে মুখ্যমন্ত্রীকে পাটের তৈরি ব্যাগে বাংলাদেশি বিভিন্ন খাদ্য ও পানীয় সামগ্রী দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:বাংলাদেশি কর্মীদের বকেয়া বেতন আদায়ে যা জানালো হাইকমিশনমালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধে চুক্তি

এ সময় অন্যান্য অতিথিসহ বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষ ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রেহানা পারভীন এবং অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। মেলায় প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবসায়ী, পরিবেশক ও দর্শনার্থী বাংলাদেশের বুথ পরিদর্শন করছেন এবং বাংলাদেশের পণ্যসামগ্রী নিয়ে তাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান জানান, হালাল পণ্যের বাণিজ্য একটি ক্রমবর্ধমান সেক্টর। সম্প্রতি হালাল পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হালাল বাণিজ্যের পরিমাণও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হলেও হালাল পণ্য বাণিজ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। মালয়েশিয়া হালাল বাণিজ্যে গত ১০ বছর ধরে শীর্ষ অবস্থান বজায় রেখেছে।

বাংলাদেশের হালাল বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের সঙ্গে হাইকমিশন কাজ করছে। এছাড়াও বাংলাদেশে যৌথ প্রচেষ্টা/প্রকল্প গ্রহণপূর্বক হালাল করিডোর/হালাল হাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক হালাল অর্থনীতির সুযোগ গ্রহণের জন্য জন্য মালয়েশিয়ায় ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

তিনি আরও জানান, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে হাইকমিশন বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণসহ অন্যান্য পরিকল্পনা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন পণ্যসাসামগ্রী নিয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ‘মৈত্রী’ কে ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান যেন এই ধরনের মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে হাইকমিশনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন।

এই মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে রাজধানী কুয়ালালামপুরের পাশাপাশি অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশেও বাংলাদেশের পণ্যের বাজার তৈরি করা সম্ভব হবে।

মালয়েশিয়া তথা আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য ও সেবাকে পরিচিত করার লক্ষ্যে হাইকমিশন নিয়মিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করে আসছে এবং ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ১০টি আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।

এমআরএম/জেআইএম