প্রবাস

বাংলাদেশি কর্মীদের বকেয়া বেতন আদায়ে যা জানালো হাইকমিশন

মালয়েশিয়ায় একটি কোম্পানির ২৫১ জন বাংলাদেশি কর্মীর পাঁচ মাসের বকেয়া বেতনের বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।

Advertisement

কাউয়াগুচি ম্যানুফেকচারিং এসডিএন বিএসডি নামে একটি কোম্পানিতে ২৫১ জন বাংলাদেশি কাজ করেন।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ জারি করে কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন। নোটিশে বলা হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কোম্পানির কর্মীদের বকেয়া বেতন সংক্রান্ত একটি অভিযোগ হাইকমিশনের নজরে আসে। হাইকমিশন তাৎক্ষণিকভাবে কোম্পানির প্রতিনিধিদের অনুরোধে বাংলাদেশি কর্মীদের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে একটি সভার আয়োজন করে।

সভায় উভয়পক্ষের সম্মতিতে বকেয়া বেতন ধাপে ধাপে ডিসেম্বর মাসের পূর্বে পরিশোধের ব্যাপারে কোম্পানি কর্তৃক প্রদত্ত প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

Advertisement

এ পরিপ্রেক্ষিতে সভার তিন দিন পরে হাইকমিশনের কর্মকর্তা প্রথম সচিব (শ্রম) সুমন চন্দ্র দাশের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে কোম্পানির সভাকক্ষে প্রতিশ্রুত প্রথম কিস্তির বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হয় এবং যথারীতি কর্মীরা কাজ শুরু করেন এবং কাজের বিপরীতে প্রাপ্য বেতন পেতে থাকেন।

নোটিশে আরও বলা হয়, কয়েকদিন আগে কর্মীদের পক্ষ থেকে হাইকমিশনে আবারও বকেয়া বেতন প্রাপ্তি সংক্রান্ত অভিযোগ আসে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানির প্রতিনিধিদের ফের হাইকমিশনে ডেকে সভা করা হয়।

সভায় কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের আর্থিক দূরাবস্থা, বিদেশি ক্রয়াদেশ বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে উৎপাদন বন্ধের বাস্তবতাসহ বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করেন। হাইকমিশনের পক্ষ থেকে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং কর্মীদের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত বিষয়ে কোম্পানিকে নিশ্চিত করার বিষয়ে অনুরোধ করা হয়।

কিন্তু কোম্পানি বকেয়া বেতন না দেওয়ায় শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে কর্মীরা কর্মবিরতি ও কোম্পানির অফিস ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে হাইকমিশনারের নির্দেশে রাত ১১টার দিকে হাইকমিশনের প্রথম সচিব (শ্রম) সুমন চন্দ্র দাশের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কোম্পানির অফিসে যায়। পুলিশ বিভাগের সদস্য, কোম্পানির কর্মকর্তা ও বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

Advertisement

আলোচনার ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে পুনরায় পুলিশ, কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মীদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় দীর্ঘ আলোচনায় সমস্যার সমাধান খোঁজা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) পোর্ট ক্লাং লেবার কোর্টে দায়েরকৃত অভিযোগের শুনানি ভুক্তভোগী বাংলাদেশি কর্মীদের কোম্পানির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে উভয়পক্ষের সম্মতিতে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

লেবার কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুরোনো কর্মীদের মধ্যে যারা দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক তাদেরকে কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় জানুয়ারি মাসে দেশে ফেরত পাঠানো এবং অন্যান্য কর্মীদের মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র ও মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মালিকানা পরিবর্তন করে তাদেরকে নতুন কোম্পানিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ ও বকেয়া বেতন কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধের সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ হাইকমিশন এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ ও কোম্পানির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

এসএনআর/এমএস