দেশজুড়ে

জরাজীর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী ভোলা বাস টার্মিনাল

নির্মাণের প্রায় ৩৬ বছরেরও মেরামত করা হয়নি ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনাল। বর্তমানে টার্মিনালটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোনো টার্মিনাল না থাকায় এখন এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ভাঙা ও খানাখন্দে ভরা সড়ক দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে প্রায় শতাধিক বাস যাতায়াত করছে।

Advertisement

এছাড়া টার্মিনালের চারদিকে নিরাপত্তা দেওয়াল ভেঙে যাওয়ায় চুরির আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে বাস মালিক ও শ্রমিকদের। যাত্রী ছাউনি না থাকায় সড়কে অপেক্ষা করতে গিয়ে ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। এছাড়া পাবলিক টয়লেট না থাকায় চরম বিপাকে পড়েন নারী যাত্রীরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন প্রতিদিন প্রায় ১৫-২০ হাজার যাত্রী।

টার্মিনালে গিয়ে জানা গেছে, ৩৬ বছর আগে ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। এই টার্মিনাল দিয়ে প্রতিদিন পাঁচটি রুটের শতাধিক বাস যাতায়াত করে। কিন্তু ভোলার গুরুত্বপূর্ণ বাস টার্মিনালটি নির্মাণের বহু বছর কেটে গেলেও সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। টার্মিনালের সড়ক ভেঙে বড় বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। ভেঙে গেছে চারপাশের নিরাপত্তা দেওয়াল। নেই যাত্রী ছাউনি ও পাবলিক টয়লেটও।

যাত্রী মো. আশরাফ আলী, মো. ইয়াছিন, অজিৎ চন্দ্র রায় ও মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, আমাদের ভোলা সদর থেকে অন্যসব উপজেলায় বাসে যাতায়াত করতে হলে এই টার্মিনাল দিয়েই যেতে হয়। কিন্তু টার্মিনালে গিয়ে টিকিট কেটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এখানে কোনো যাত্রী ছাউনি নেই। রোদ-বৃষ্টি ও ঝড় যাই হোক না কেন যাত্রীদের আশ্রয়ের কোনো ছাউনি নেই।

Advertisement

তারা আরও বলেন, সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা বিপজ্জনক। কখন বাস এসে ধাক্কা দেয়, তারপরও আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। নেই কোনো খাবারের হোটেল। আমরা চাই টার্মিনালটি দ্রুত আধুনিক বাস টার্মিনালে রূপান্তর করা হোক।

নারী যাত্রী সুমি বেগম, তৃষ্ণা রানী বর্ণিক ও সুমাইয়া আক্তার বলেন, এই টার্মিনালে নারীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ দুর্ভোগ দ্রুত সমাধান করা উচিত।

বাসচালক মো. সুমন, মো. ইলিয়াস ও মো. শামিম হোসেন জানান, টার্মিনালের সড়ক ভাঙা, বড় বড় খানা-খন্দের কারণে বাস ভেতরে প্রবেশ ও বের করতে কষ্ট হয়। যে কোনো সময় বাস উল্টে যেতে পারে। গর্তে বাস পরে যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হয়। এছাড়া দেওয়াল ভেঙে যাওয়ায় প্রতিদিন বাসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও তেল মবিল চুরি হয়ে যায়।

ভোলা বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মো. মুনতাসির আলম রবিন চৌধুরী বলেন, বাসস্ট্যান্ডটি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ার পরও বিকল্প কোনো স্ট্যান্ড না থাকায় এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। টার্মিনালটিকে দ্রুত একটি আধুনিক টার্মিনাল করা উচিত।

Advertisement

ভোলা পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসীম উদ্দিন আরজু বলেন, আপাতত বীরশ্রেষ্ঠ বাস টার্মিনালের সড়ক ব্যবস্থা, ড্রেন ও সড়ক বাতির উন্নয়নের জন্য একটি ছোট প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি অনুমোদন হলে কাজগুলো করা সম্ভব হবে। এছাড়াও পরবর্তীতে বাসস্ট্যান্ডটি একটি আধুনিক বাসস্ট্যান্ডে রূপান্তরিত করা হবে।

তিনি জানান, প্রায় ৩ একর জমির ওপর ১৯৮৮ সালের দিকে ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। তবে ১৯৯৬ সালের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে টার্মিনাল দিয়ে বাস চলাচল শুরু হয়।

জুয়েল সাহা বিকাশ/জেডএইচ/এএসএম