সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মোদীর কুশপুতুল দাহ ও বেসরকারি তিন শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবি তুলেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
Advertisement
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে তাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা।
বিজয় দিবস নিয়ে মোদীর বক্তব্যের প্রতিবাদে ও তিন শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবিতে রাতে মধুর ক্যান্টিন থেকে মশাল মিছিলটি শুরু করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। মিছিল কলাভবন-সূর্য সেন হল-মল চত্বর-স্মৃতি চিরন্তন হয়ে টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, আমাদের দাদারা ব্রিটিশদের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে এবং বাবারা যুদ্ধ করছে পাকিস্তানের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে। আমাদের তরুণ দামালদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন ভারতের আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী লীগের দোসর উৎপাটন করতে আপনারা প্রস্তুত হন। আমাদের লড়াই চলছে এবং চলবে। ১৯৭১ সালে ভারত সহযোগিতা করেছিল তাদের স্বার্থের কারণে এবং আমরা সাহায্য নিয়েছিলাম সেই স্বার্থের কারণে আমরা সাহায্য নিয়েছিলাম। বিজয় দিবসে মোদী যে বক্তব্য রেখেছেন, আমার মনে হয় ভারতের জনগণ এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হবেন না। সরকার যাবে, সরকার আসবে ভারত-বাংলাদেশের মানুষের যে সম্পর্ক সেটি থাকবে কিন্তু সরকারের কথায় ব্যবহার হওয়া যাবে না।
Advertisement
সম্প্রতি শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিপ্লবীদের চোরাগোপ্তা হত্যা করা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত নাকি মাত্র ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ যদি আমাকে চোরাগোপ্তা হত্যা করা হয়, জড়িতদের গ্রেফতার করবেন। কিন্তু এই গ্রেফতারই কি শেষ অথচ সরকারের কত সংস্থা আছে! তাহলে কি আমরা ধরে নেবো আপনারা ব্যর্থ? যদি ভারত ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে দেশ চালান, আমরা যারা এই দেশের জন্য রক্ত দিয়েছি, তারা কোনোভাবেই এটি মেনে নেবো না।
এ সময় বিন ইয়ামিন মোল্লা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন নিয়ে জাতীয় ছাত্র কাউন্সিল গঠন; তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা; সকল রাজনৈতিক দল নিয়ে জাতীয়গত ঐক্য গঠন ও সংকট মোকাবিলায় জরুরি বৈঠক; অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সংস্কার করে বিতর্ক মুক্ত করে যোগ্যদের নিয়োগ এবং শূন্য মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা নিয়োগ; অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, যদি এই দাবিগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়নে কোনো অবহেলা করে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা না নেয়, আমরা ধরে নেবো এই সরকার ভারত এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে দেশ চালাচ্ছে অথবা তারা ব্যর্থ। আমরা কোনোভাবেই আমাদের বিপ্লব ব্যর্থ হতে দেবো না, বিকল্প পন্থায় দেশ নির্মাণের স্বপ্ন থেকে আমাদের যা করতে হয়, আমরা করব।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের সিনিয়র সভাপতি নাহিদুদ্দিন তারেক, ঢাবি শাখা সদস্য সচিব রাকিবুল হাসান, আহ্বায়ক সানাউল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন। পরে নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুল দাহ করা হয়।
Advertisement
এমএইচএ/এমআরএম