দেশজুড়ে

চাঁদপুরে গো-খাদ্য সংকট, বিপাকে খামারিরা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে শুকনো খড় পচে নষ্ট হওয়ায় উপজেলাজুড়ে দেখা দিয়েছে গবাদিপশু খাদ্যের তীব্র সংকট। কিছু স্থানে খড় পাওয়া গেলেও কিনতে হচ্ছে চড়া দাম দিয়ে। ফলে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা।

Advertisement

জানা গেছে, চলতি বছরের জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এত চাষিদের খড়ের গাদা পানিতে ডুবে পচে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

খামারিরা জানান, মৌসুমি কিছু ব্যবসায়ী উঁচু অঞ্চল থেকে খড়ের গাদা কিনে আঁটি তৈরি করে বিক্রি করছেন। তারা কেনা মূল্যের চেয়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন।

অন্যদিকে ভুসি ও চালের গুঁড়াসহ বিভিন্ন দানাদার গো-খাদ্যের দামও লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতি বস্তা ভুষি এক হাজার ৩০০ থেকে বেড়ে এক হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের গুঁড়া এক হাজার ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ১ হাজার ৮২০ টাকা হয়েছে। ধানের গুঁড়া প্রতি বস্তা ৫২০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

Advertisement

উপজেলার চান্দ্রা এলাকার রাসেল শেখ নামে খামারি বলেন, গরুর জন্য চরবসন্ত এলাকার বটতলী বাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে খড় কিনেছি। যা একটি মিনি পিকআপ ভ্যানও ঠিকমতো ভরেনি। এই সমপরিমাণ খড় গত বছরে কিনতে দুই হাজার টাকাও লাগেনি। গরু বাঁচাতে নিরুপায় হয়ে ৫ গুণ বেশি মূল্যেই খড় কিনতে হয়েছে।

বড়ালী এলাকার খামারি ইব্রাহিম বলেন, সারাবছর গো-খাদ্যর জন্য সঞ্চিত রাখা হতো শুকনো খড়। এ বছর অতিবর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে খড় পচে নষ্ট হয়ে গেছে। মাঠে ধান থাকায় কাঁচা ঘাসও মিলছে না। চড়া দামে মতলব উপজেলা থেকে ১২ হাজার টাকার খড় কিনেছি। তা তিনটি গরুর ১০ দিনের খাবারও হয়নি।

আবুল কালাম নামে আরেক খামারি জানান, ভুষি ও ধানের গুঁড়োসহ দানাদার খাদ্যের দামও বেড়েছে। খড় ও দানাদার খাদ্য মিলে প্রতিটি গো-খাদ্যের পেছনে দৈনিক ২৫০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আগামী দুই মাসেও মাঠে নতুন ঘাস আসবে না, তাই বাড়তি দাম দিয়ে গো-খাদ্য কিনতে হবে।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুমন ভৌমিক বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে খামারিদের সঞ্চিত খড়ের গাদা পচে নষ্ট হওয়ায় গো- খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারে দানাদার খাবারের মূল্য ন্যায্যতার বাইরে নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এজন্য বিভিন্ন বাজারের গো-খাদ্যর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। ঘাস চাষ ও বিভিন্ন উপায়ে পশু পালনের স্বার্থে খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

Advertisement

শরীফুল ইসলাম/এএইচ/এমএস