উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে গত তিন বছরে (২০২২-২০২৪) দেশের আরও ৭৮ লাখ ৬০ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছে। প্রকৃত মজুরি যে হারে বেড়েছে তার চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে অনেক বেশি। ফলে মানুষ ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে দরিদ্র হয়েছে।
Advertisement
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। র্যাপিড চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক গবেষণাটি উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে রাজ্জাক বলেন, ৭৮ লাখ ৬০ হাজার মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে এসেছে। অন্যদিকে, ৯৮ লাখ ৩০ হাজার মানুষ অতিমাত্রায় দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, চরম দারিদ্র্য ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ৯৫ হয়েছে এবং অতিরিক্ত ৩৮ লাখ ২০ হাজার মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে।
Advertisement
রাজ্জাক দাবি করে বলেন, মূল্যস্ফীতির জন্য দেশীয় নীতির দুর্বলতা দায়ী। বৈশ্বিক প্রভাব এখানে দৃশ্যমান নয়। আমাদের দেশীয় নীতির দুর্বলতা ও ভুল নীতির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। বহির্বিশ্বের আঘাতের কথা বলা হলেও মূল কারণ হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি এবং সরকারের আর্থিক অব্যবস্থাপনা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, নভেম্বর মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কিছুটা স্বস্তি এসেছিল মূল্যস্ফীতি খাতে। অক্টোবর মাসে ফের খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে সাধারণ বা গড় মূল্যস্ফীতির হারও বেড়েছে। এই হার বেড়ে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ হয়েছে, গত মাসে যা ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। নভেম্বর মাসে বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন ও শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়েছে। অক্টোবর মাসে এ খাতে মূল্যস্ফীতিরে হার ছিল ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, অথচ নভেম্বর মাসে বেড়ে যা হয়েছে ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
২০২৩ সালের আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হয়, যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। এর আগে খাদ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি ছিল ২০১১ সালের অক্টোবরে।
Advertisement
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের সর্বশেষ তথ্যমতে, বাংলাদেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন ৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে, দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার।
আইএইচও/এএসএ/জেআইএম