মতামত

দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের আনসার ব্যারাকে হামলা চালিয়ে  একজনকে হত্যা ও অস্ত্রলুট একই সঙ্গে দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। এ ধরনের অপতৎপরতা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারেও অভিযান চালাতে হবে। নিহত আনসার কমান্ডারের পরিবারের জন্যও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সামগ্রিকভাবে এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে নিতে হবে কার্যকরী পদক্ষেপ। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপড়া শরণার্থী শিবিরের আনসার ব্যারাকে এই হামলা হয়। ২০-২৫ জনের একটি সশস্ত্র দল কয়েক ভাগে ভাগ হয়ে আনসার ব্যারাকে হানা দেয়। এতে বাধা দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা গুলি করে। পরে দুর্বৃত্তরা ব্যারাকের অস্ত্রাগার থেকে পাঁচটি চায়নিজ রাইফেল, দুটি এসএমজি, চারটি শটগান ও ৬৯০টি গুলি লুট করে নিয়ে যায়। ব্যারাকে ৯ জন আনসার সদস্য ছিলেন। ব্যারাকে ঢোকার মুখে পাহারায় আনসার সদস্য অজিত বড়ুয়াকে আটকে তাঁর মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখে। এ সময় প্লাটুন কমান্ডার আলী হোসেন এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা গুলি ছোড়ে। তাদের হামলায় নিহত হয়েছেন বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার আলী হোসেন (৫৫)। আহত হয়েছেন আরেকজন সদস্যসহ দুজন। কক্সবাজার সদর থেকে ৮৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত টেকনাফ উপজেলাটি মিয়ানমারের সীমান্ত লাগোয়া। ওই এলাকায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরকেন্দ্রিক জঙ্গি তৎপরতা থাকায় আনসার ব্যারাকের হামলায় জঙ্গিরা জড়িত বলে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও সাধারণ মানুষ ধারণা করছে। আবার এলাকায় ডাকাতদেরও অপতৎপরতা রয়েছে। অস্ত্র সংগ্রহের জন্যও এই হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে-এমনও ধারণা করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এর কারণ খুঁজে বের করে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে। আনতে হবে কঠোর শাস্তির আওতায়। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরকে কেন্দ্র করে জঙ্গি তৎপরতা, মাদক, চোরাচালান, মানবপাচারসহ নানা রকম অপরাধী চক্র গড়ে উঠেছে। এ কারণে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের নতুন সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করতে হবে। সীমান্তবর্তী ওই অঞ্চলে সন্ত্রাসের বিস্তার রোধে রোহিঙ্গা সমস্যাটি সমাধান করা অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করতে হবে যাতে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়।  দেশের মানুষ এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চায় না। এইচআর/এমএস

Advertisement