একজন মাঠে ফুটবল খেলে বেড়ান। পেয়েছেন দারুণ জনপ্রিয়তা। আরেকজন গান দিয়ে জয় করে চলেছেন পুরো দুনিয়া। দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা তারা। কিন্তু হৃদয়ের টানে এক হয়ে মিশে গেছেন। সর্বত্রই এখন আলোচনার বিষয় টেইলর সুইফট ও ট্র্যাভিস কেলসের মিষ্টি প্রেমকাহিনী।
Advertisement
২০২৩ সালের দিকে তারা কাছাকাছি আসেন। তারপর থেকে বেড়েছে ঘনিষ্ঠতা। দিনে দিনে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তাদের সম্পর্ক। পপস্টার টেইলর সুইফট এবং এনএফএল তারকা ট্র্যাভিস কেলস খুব দ্রুত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন প্রেমযুগল হিসেবে। তারা ফুটবল ম্যাচ থেকে শুরু করে কনসার্ট এবং সেলিব্রিটি ইভেন্টেও একে অপরকে সমর্থন জানিয়ে বিশ্বকে তাদের সম্পর্কের কথা জানান দিয়েছেন।
তাদের সম্পর্কটা সাধারণ পরিচয় দিয়ে ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে শুরু হয়েছিল। এখন লাখো মানুষের হৃদয় জয় করেছে তাদের দুষ্টুমিষ্টি প্রেমকাহিনী।
ব্যর্থতা দিয়ে হলো পরিচয়দুই তারকার দেখাটা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুলাইয়ে। ট্র্যাভিস তার প্রিয় সংগীতশিল্পী টেইলর সুইফটের কনসার্টে গিয়েছিলেন যেটি কানসাস সিটির অ্যারোহেড স্টেডিয়ামে হয়েছিল। তিনি টেইলরকে ফোন নম্বরসহ একটি বন্ধুত্ত্বের ব্রেসলেট উপহার দেবেন বলে নিয়ে গিয়েছিলেন। যাতে তার ফোন নম্বর থাকবে। কিন্তু সেই সুযোগ হয়নি। পরে ট্র্যাভিস তার পডকাস্টে ব্রেসলেট দিতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে হতাশার কথা জানান। টেইলর সেটি জেনে খুব আনন্দ পেয়েছিলেন। তারপর তিনি যোগাযোগ করেন। এরপর থেকেই তারা একে অপরকে মেসেজ পাঠানো শুরু করেন। বাড়তে থাকে ঘনিষ্ঠতা।
Advertisement
পরিচয়ের শুরু থেকেই টেইলর এবং ট্র্যাভিস তাদের সম্পর্কটি তৈরি করেছেন পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমর্থনের ভিত্তিতে। টেইলর ২০২৩ সালের বেশিরভাগ সময় তার ঐতিহাসিক এরাস ট্যুরে ব্যস্ত ছিলেন। তবুও তিনি প্রায়ই কানসাস সিটি চিফসের ম্যাচে ট্র্যাভিসকে সমর্থন করতে স্টেডিয়ামে হাজির হতেন। এটা একপেশে ছিল না। ট্র্যাভিসও তার প্রিয় সংগীতশিল্পী টেইলরের কনসার্টে অংশ নিতে হাজির হতেন। প্রথম সারিতে বসে তাকে সমর্থন জানাতেন।
ভক্তরা তাদের একে অপরকে বিভিন্ন ইভেন্টে সমর্থন করতে দেখে বেশ আনন্দিত হয়। ট্র্যাভিসের পরিবারের সঙ্গে বসে টেইলর ফুটবল ম্যাচ দেখেন। ট্র্যাভিসও টেইলরের কনসার্টে দর্শকাসনে বসে সমর্থন জানান। এভাবেই তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্ব থেকে সমর্থনকারী হয়ে প্রেমের দিকে যাত্রা করেছে।
চুমুর উত্তাপে রটে গেল প্রেমকাহিনীপ্রথমদিকে সম্পর্কটাকে তারা বেশ গোপন রাখতেন। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তারা প্রথমবার একসাথে পাবলিক স্থানে দেখা দেন। তখন ট্র্যাভিসের মা ডোনা কেলসের সঙ্গে চিফসের একটি ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন টেইলর। ম্যাচের পরে তারা একসাথে একটি বারেও যান। সেখানে তাদের একে অপরকে চুমু খেতে দেখা যায়। সেই থেকেই সবখানে রটে গেল তাদের প্রেমকাহিনী। প্রেমও ততদিনে জমে ক্ষীর।
তারপর থেকে মাঠে ও মঞ্চে টেইলর এবং ট্র্যাভিস একে অপরের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিয়েছেন। টেইলর তার বন্ধুদের নিয়ে ট্র্যাভিসের খেলা দেখতে গিয়েছেন এবং ট্র্যাভিসও টেইলরের কনসার্টে হুমকি দিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ট্র্যাভিস আর্জেন্টিনায় টেইলরের কনসার্টে গিয়েছিলেন।
Advertisement
টেইলর এবং ট্র্যাভিসের সম্পর্কের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হলো তাদের একে অপরের পরিবারের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি হওয়া। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ট্র্যাভিসের পরিবারে টেইলরকে স্বাগত জানানো হয়েছিল। ট্র্যাভিসের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা টেইলরকে খুব পছন্দ করেছেন। ট্র্যাভিসের বাবা টেইলরকে সুন্দর হৃদয়ের মেয়ে দাবি করে ছেলেকে পরামর্শও দিয়েছেন এই বলে, ‘টেইলরকে উপহার দিতে টাকা ব্যয় করার দরকার নেই। যদি বিশেষ কিছু করতে পারো তবেই তার হৃদয় জয় হবে।’
মিলন হবে কতদিনেসব সম্পর্কই গন্তব্য চায়, একটা পরিণতি চায়। আর প্রেমের পরিণতি হিসেবে বিয়েই প্রত্যাশা করে সবাই। টেইলর ও ট্র্যাভিস কোনপথে হাঁটছেন, কী তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা- জানতে চান তাদের ভক্তরা। তারকাদের প্রেম-বিয়ে যেখানে তাসের ঘর বলে মনে করা হয় সেখানে এই দুই তারকার সম্পর্কটা কতদিন স্থায়ী হবে? এসব প্রশ্নের জবাব কেউ জানে না। তবে একথা সুনিশ্চিত, টেইলর সুইফট এবং ট্র্যাভিস কেলস একটি প্রেমের ময়দানে দুর্দান্ত একটি জয়ী টিম। যে টিম মাঠে এবং মাঠের বাইরে বেশ সাফল্যের দিকে ছুটছে।
তাদের সম্পর্ক স্থায়ী হোক বা না হোক, ভক্তরা আরও সুন্দর মুহূর্ত এবং একে অপরকে সমর্থন করার দৃশ্য দেখতে চান। ট্র্যাভিস একবার বলেছিলেন, ‘এটা হলো সেই জীবন যা আমি বেছে নিয়েছি’। টেইলরও বার্তা দিয়েছেন, ‘আমি তাকে উপভোগ করি।’
ব্যস, হলো তো। আর কী চাই!
এলএ/এমএস