ওপেনারদের ব্যর্থতার মিছিল বেশ লম্বা বাংলাদেশের। শুরুতে প্রতিশ্রুতির ছাপ রাখলেও ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে পড়েছিলেন তানজিদ তামিমও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ওয়ানডে সিরিজের আগে শেষ ৯ ম্যাচে ফিফটি ছিল মাত্র একটি। শেষ হাফ সেঞ্চুরিটি ছিল ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চট্টগ্রামে (৮১ বলে ৮৪)।
Advertisement
শেষ দিকে খারাপ খেলায় তানজিদ তামিমের দলে থাকাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। ধারণা ছিল তামিমকে বাদ দেওয়া হতে পারে; কিন্তু নির্বাচকরা তা করেননি। তানজিদ তামিমের ওপর আস্থা রেখেই তাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে রাখা হয় এবং এই বাঁ-হাতি ওপেনার প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৬০ ও ৪৫ রানের দুটি ভালো ও কার্যকর ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তার ব্যাটিংয়ে অনেকেই আস্থার ছাপ পেয়েছেন। তামিমের ব্যাট চালনায় আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের ছাপ খুঁজে পেয়েছেন অনেকেই।
খেলা ছেড়ে জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে দীর্ঘদিন জড়িত খালেদ মাহমুদ সুজন তানজিদ তামিমের এই ব্যাটিং দেখে সন্তুষ্ট এবং তার অনুভব, ‘তামিম এবার অনেক ফ্রি হয়ে খেলেছেন। ভেতরে কোনো ভয়, ডর ও দ্বিধা সংশয় না রেখে ব্যাট করেছেন, তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের বিপক্ষেও তাকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে।’
সুজন আরও মনে করেন, তানজিদ তামিমের ব্যাট চালনা দেখে মনে হয়েছে, তার ভেতরে দল থেকে বাদ পড়ার সংশয়, শঙ্কা কাজ করেনি। তামিমের আস্থা ও আত্মবিশ্বাস বাড়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে খালেদ মাহমুদ নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তার কথা, ‘আমি নির্বাচকদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাবো, কারণ নির্বাচকরা তাকে সময় নিয়ে দলে রেখেছেন এবং খেলাচ্ছেন। সেটা একটা বড় কারণ ওপেনিং ভালো হওয়ার।
Advertisement
কোনোরকম এক্সপেরিমেন্টে না গিয়ে নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট তানজিদ তামিমের ওপর আস্থা রেখেছেন এবং তামিমকে খেলিয়েছেন। তাকে ফেলে দেননি। এটা একটা পজিটিভ দিক। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটে ‘ইজি’ হতে সময় লাগে। থ্যাংকস টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের যে আমরা তাকে সে সময়টা দিয়েছি। তানজিম তামিম তাই বাহবা পেতেই পারেন। তানজিদ তামিমের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তাকে না পাল্টে খেলতে দিয়েছেন। এটা একটা ভালো দিক।
বাকি ব্যাটারদের সম্পর্কে সুজনের মূল্যায়ন, ‘সৌম্য ডেফিনেটলি এক্সপেরিয়েন্স। আই থিংক সৌম্য দীর্ঘ দিন খেলে ফেলেছে, এখন তার উচিৎ ধারাবাহিকতা বাড়ানো এবং তার ব্যাটটা ধারাবাহিকভাবে রান করার একটা অস্ত্র হিসেবে রূপান্তর করা।’
লিটনের ব্যাপারে সরাসরি হতাশা ব্যক্ত করে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘আমি খানিক হতাশ। লিটন কেন রান করতে পারছে না, তা আমি জানি না। সে ওয়ান অফ দ্য বেস্ট ব্যাটার বাংলাদেশের। তার ভালো খেলা জরুরি।’ আফিফ হোসেন ধ্রুব সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুজন বলেন, ‘আফিফ অনেকদিন পর দলে ফিরেছে। লম্বা ইনিংস খেলতে পারেনি। তবে প্রতি খেলায়ই স্টার্ট পেয়েছে। রান করতে পারেনি। তবে তার মাঝে অ্যাবিলিটি আছে বড় খেলার। সে গেম চেঞ্জার। বাট আমি তার কাছ থেকে আরও বেটার ও বড় কিছু আশা করেছিলাম।’
জাকের আলী অনিকের ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা সুজনের মুখে, ‘আমি সব সময়ই জাকের আলী অনিককে নিয়ে উচ্চ ধারণা পোষণ করি। হি ইজ অ্যা সুপার পারফরমার। আমি ভেরি মাচ ইমপ্রেসড। দ্য ওয়ে হি ব্যাটেড, ইভেন ইন টেস্ট সিরিজ, আমারতো মনে হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে শেষ টেস্ট জেতার মূল ও পুরো কৃতিত্বটা আসলে জাকের আলী অনিকের। অবশ্যই বোলাররা ভালো বল করেছে। তবে জাকের আলী ওই ইনিংসটি না খেললে তো আর জিততে পারতাম না। সে জানে কি করতে হবে।’ ‘যেদিন লম্বা সময় ব্যাট করতে হবে, সেদিন তা পারে। আবার যেদিন মারার সেদিন তা পারে। সে বেষ্ট ফিনিশার। রিয়াদের পর বেষ্ট ফিনিশার। রিয়াদ নিজেও অনেকদিন ফিনিশার হিসেবে অনেক লম্বা সার্ভিস দিয়েছে। এবানো দিল। এ সিরিজেও চমৎকার ব্যাট করেছে রিয়াদ। এখন মনে হয় রিয়াদের যোগ্য উত্তরসূরি হতে পারে জাকের আলী।’
Advertisement
এআরবি/আইএইচএস