দেশজুড়ে

বাঁধ কেটে ইটভাটায় যাতায়াত

বরগুনায় নিজেদের সুবিধার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ কেটে পথ নির্মাণ করেছেন ইটভাটা মালিক। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এ পথ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি প্লাবিত হয়। এনিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করলেও এতদিন ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাননি।

Advertisement

ওই ইটভাটার নাম ‘এসবিসি’। ভাটামালিক বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বোনজামাই সিদ্দিকুর রহমান।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এক দশক আগে বরগুনা সদর উপজেলার কুমড়াখালী গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঘেঁষে একটি ইটভাটা স্থাপন করেন গোলাম মোস্তফা নামের এক ব্যক্তি। নদ থেকে বালু ও মাটি এবং নৌযানে করে আনা অন্য মালামাল সহজে আনা ও নেওয়ার জন্য তখন বাঁধটি কেটে একটি কালভার্ট তৈরি করেন তিনি। বাঁধ কেটে কালভার্ট তৈরি করায় জোয়ারে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে জমির ফসল ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দুই বছর আগে সে ইটভাটাটি কিনে নেন বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি কেনার পরও একইভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

Advertisement

সরেজমিনে দেখা যায়, ইটভাটার জন্য তৈরি কালভার্টের নিচে দিয়ে ভ্যানে করে বাঁধের এক পাশ থেকে অন্য পাশে কাঁচা ইট নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ইটভাটার পরিধি বাড়ানোর জন্য খাকদোন নদের চরে ২০০ ফুট ইট ও খোয়া ফেলে ভরাট করা হয়েছে।

ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা বেল্লাল জাগো নিউজকে বলেন, কালভার্টটা তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র ইটভাটার মালামাল পরিবহনের সুবিধার্থে। বন্যার সময় এ কালভার্ট দিয়ে প্রথমে পানি ঢুকে আমাদের গ্রামে।

তাহসিন মল্লিক নামের ফুলতলা এলাকার এক শিক্ষার্থী বলেন, ছোটবেলা থেকে কখনো এ কালভার্টে কোনো গেট দেখিনি। জোয়ারের সময় এখান দিয়ে পানি প্রবেশ করে। আমরা এ কালভার্টটি বন্ধের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে এসবিসি ইটভাটার ম্যানেজার মো. রিপন জাগো নিউজকে বলেন, ইটভাটাটি আমরা দুই বছর আগে কিনেছি। আগের মালিক ৮-১০ বছর আগে কালভার্টটি মালামাল পরিবহনের জন্য তৈরি করেছিলেন। এটা ব্যবহার না করার জন্য আমরা কোনো লিখিত নোটিশ পাইনি। তাই আমরা এটা ব্যবহার করছি।

Advertisement

এ বিষয়ে ইটভাটা মালিক ও বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মোবাইলে কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে।

এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব জাগো নিউজকে বলেন, ইতোমধ্যে মালিকপক্ষকে নোটিশ দিয়েছি, যাতে কালভার্টটি ভেঙে বাধঁটি আগের অবস্থায় নিয়ে আসে। যদি তারা আমাদের দেওয়া নোটিশের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাধঁটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে না আনেন তবে আমরা নিজেরাই এটি ভেঙে ফেলবো।

নুরুল আহাদ অনিক/আরএইচ/জিকেএস