ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হলেও অন্তত দুটি ম্যাচে জয়ের সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের। প্রথম ম্যাচে ২৯৪ রান আর শেষ ম্যাচে আরও বেশি ৩২১ করেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। হেরেছে যথাক্রমে ৫ ও ৪ উইকেটে।
Advertisement
ভালো পুঁজি করেও কেন জিততে পারেনি বাংলাদেশ, তার নানা রকম কারণ খুঁজে বের করছেন ভক্ত-সমর্থকরা। অনেকেই মনে করছেন, স্পিনারদের অকার্যকর পারফরম্যান্সের কারণেই হেরেছে মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলে ছিল তিন স্পিনার- রিশাদ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদ। ওই ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্স কেমন ছিল দেখা যাক।
৮.৫ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে ২টি উইকেট শিকার করেছেন রিশাদ। ৭ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে ১ উইকেট শিকার করেন নাসুম। ১০ ওভার বোলিং করে ৬৭ রান খরচা করলেও উইকেটশূন্য ছিলেন মিরাজ।
Advertisement
পেসাররা শুরুতে ব্রেকথ্রু এনে দিলেও শেষ পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। কেন স্পিনাররা ম্যাচ জেতানো বোলিং করতে পারেননি? তা নিয়ে ভক্ত মহলে নানা প্রশ্ন। দেশের অন্যতম কুশলী, ক্রিকেটবোদ্ধা ও বিশ্লেষক নাজমুল আবেদিন ফাহিম সে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে স্পিনারদের অকার্যকারিতার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফাহিম বলেন, ‘যে উইকেটে খেলা হয়েছে, সে উইকেটে আমাদের স্পিনাররা বল করে অভ্যস্ত নয়। আমাদের দেশে যে লেন্থে বল ফেলে সফল হওয়া যায়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওই লেন্থে বল ফেলতে পারেননি। বল একটু টার্ন করে। ওইখানে বল ফেললে টার্ন করে না। ব্যাটাররা নিজের নিয়ন্ত্রণে বল পেয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বোলারদের ঠিক ওই লেন্থে বল করার চর্চাটা কম। আমাদের স্পিনারদের যদি ওই চর্চা থাকতো, তাহলে হয়তো তারা আরেকটু কার্যকর হতো। সেক্ষেত্রে প্রথম ও তৃতীয় ম্যাচের ফল ভিন্ন হতে পারতো।’ যদি অনভিজ্ঞতা ও চর্চায় ঘাটতি হয় তাহলে মিরাজ কেন পারেননি? ডানহাতি স্পিনার তো ২০১৮ ও ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দলে ছিলেন। ওয়ানডে সিরিজেও অংশ নিয়েছেন। তার তো জানা থাকার কথা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পিচে কোন লেন্থে বল ফেললে সফল হওয়া যায়। তিনি কেন ব্যর্থ হলেন?
ফাহিমের ব্যাখ্যা, ‘আমার মনে হয় এ সময়ের মধ্যে উইকেটের চরিত্র পাল্টে দেওয়া হয়েছে। এখনকার উইকেটের পার্থক্য আছে। এবার একদম ব্যাটিং উইকেট ছিল। উইকেট কতটা ব্যাটিং ফ্রেন্ডলি ছিল, তার নমুনা দেই। আমাদের ব্যাটাররা গড়পড়তা প্রতি ম্যাচে ৮-১০টি করে ছক্কা হাঁকিয়েছে। যেটা নিকট অতীত ও সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় দূর্লভ ঘটনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘উইকেট ছিল খুবই কঠিন। এ উইকেটে স্পিনারদের কিছুই ছিল না। এখানে মেধা, বুদ্ধি খাটিয়ে জায়গামতো বল করতে না পারলে সফল হওয়া কঠিন ছিল।’ ফাহিমের শেষ কথা, ‘এবার যে উইকেটে খেলা হয়েছে সেখানে কোন লেন্থে বল করলে প্রতিপক্ষ ব্যাটাররা ইচ্ছেমতো শট খেলতে পারবে না, রানের নহর বইবে না, তা বোঝাও ছিল খুব কঠিন। অ্যাটাকিং স্পিন বোলিংয়ের সুযোগ ছিল না। এখানে স্পিনারদের আক্রমণ করে উইকেট আদায়ের সম্ভাবনা কম ছিল।’
Advertisement
এআরবি/এমএইচ/এএসএম