মিয়ানমারে চলমান সংঘাত ও আরাকান আর্মি দেশটির রাখাইনের গুরুত্বপূর্ণ শহর ও সীমান্ত চৌকি পুরোপুরি দখলে নেওয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন উখিয়া-টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতারা। নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কাও করছেন তারা।
Advertisement
রোহিঙ্গারা বলছেন, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি রয়েছে কিন্তু আরাকান আর্মির কোনো দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি নেই। তারা সন্ত্রাসী সংগঠন। আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইনে তাদের লোকজনের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সভাপতি উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে ডা. জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যখন রাখাইনে ছিলাম তখন জান্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে নির্যাতন করতো, নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করতো। তবে আরাকান আর্মি আমাদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে বেশি। বাড়িঘরে চুরি-ডাকাতি করেছে। বিষয়টি জান্তা সরকারকে জানালেও বিচার পাওয়া যেতো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের দেশ নয়। আমরা এখানে মানবিক আশ্রয়ে রয়েছি। মিয়ানমার আমাদের নিজ মাতৃভূমি। জান্তা সরকার আমাদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করলে আমরা চলে যাবো। এভাবে ক্যাম্পের ছোট ঘরে আর কতদিন থাকবো? রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘসহ বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
Advertisement
একই কথা বলেন আরাকার রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের উপদেষ্টা মো. তৈয়ব। তিনি বলেন, ‘আরাকান আর্মি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তাদের কোনো জবাবদিহি নেই। তাদের অত্যাচার ও নির্যাতনের বিচার কাদের কাছে দেবো? আরাকান আর্মির চেয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকার আমাদের জন্য অপেক্ষাকৃত ভালো ও নিরাপদ।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, যেহেতু রাখাইনের মংডু শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তচৌকি পুরোপুরি আরাকান আর্মি দখল করেছে, সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা নাফ নদীতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১০ মাস ধরে রাখাইন রাজ্য দখলে নিতে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র লড়াই চলে। বর্তমানে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ২৭০ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। সেইসঙ্গে রাখাইনের সেনা ক্যাম্প, মংডু শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
জাহাঙ্গীর আলম/এসআর/এএসএম
Advertisement