রাজনীতি

জামায়াত নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো করছে না, তবে কালক্ষেপণও চায় না

যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

Advertisement

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো করছে না, তবে কালক্ষেপণও চায় না। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে না। আবার নির্বাচনে কালক্ষেপণ হলেও ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করা।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টন মাঠে জামায়েতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে দেশ শাসনের জন্য নয়, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনরগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু বিলম্ব হলে বিদেশে বসে ষড়ন্ত্রকারীদের লক্ষ্য সফল হবে। নির্বাচন দিতে যত দেরি হবে ষড়যন্ত্র তত বাড়বে। আওয়ামী লীগকে হটাতে হলে জাতীয় ঐক্য গঠন করে ভোটের মাধ্যমে একটি সরকার গঠন করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আওয়ামী লীগকে ভোটের মাঠে কবর দিতে হবে।

Advertisement

এসময় তিনি অভিযোগ করেন, কাদের মোল্লাকে অন্যায়ভাবে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ফাঁসিতে ঝুলিয়েছেন। কাদের মোল্লা, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, কামারুজ্জামানদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে, আইন বদল করে তাদের ফাঁসি (সাজা) দেওয়া হয়েছে। এখন ট্রাইব্যুনালে বিচার হচ্ছে, সেখানে ন্যায়বিচারের মাধ্যমেই খুনি, মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার বিচার হবে, ফাঁসি হবে। মিথ্যা সাক্ষী লাগবে না, সত্য ঘটনা দিয়েই শেখ হাসিনার শতবার ফাসি হবে ইনশাআল্লাহ।

আরও পড়ুনভারতকে প্রতিহত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াই যথেষ্ট: ফারুকদাদাগিরি করতে গিয়ে প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রকে বিষিয়ে তুলেছে ভারত

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী সৎ এবং যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চায়। দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে চায়।

অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর এই পল্টন ময়দানে আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে ফ্যাসিবাদের যাত্রা শুরু করেছে। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে ফ্যাসিবাদের চর্চা করেছে। গত ১৫ বছর যারাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করেছে, তাদেরকেই আওয়ামী লীগ নিঃশেষ করার মিশনে লিপ্ত হয়েছে। সেই মিশন থেকে রক্ষা পায়নি জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির, হেফাজতে ইসলামী, বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের লোকজন।

ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, গণহত্যার দায়ে খুনি হাসিনার গ্রেফতার পরোয়ানা জারি হওয়ার পরও তাকে আশ্রয় দিয়ে ভারত প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেনি এবং চায় না। তাদের বন্ধুত্ব শুধুই আওয়ামী লীগের সঙ্গে। ভারত যদি এ দেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায়, তবে খুনি হাসিনার বক্তব্য প্রচার করতে দিতে পারে না। হাসিনার বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রে সমর্থন ও সহযোগিতা থাকতে পারে না এবং পারবে না।

Advertisement

কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দলটির পল্টন থানা আমির শাহীন আহমেদ খান। এতে পল্টন থানা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ও বর্তমান দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

এএএম/কেএসআর/জেআইএম