প্রবাদ আছে-কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। বাফুফের জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিএফএ) অবস্থা ঠিক তাই। ডিএফএ কীভাবে চলছে, তা খতিয়ে দেখতে বাফুফে গঠন করেছিল ‘ডিএফএ মনিটরিং কমিটি’।
Advertisement
৯ নভেম্বর নতুন নির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় যে ১১টি অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তার একটি এই ডিএফএ মনিটরিং কমিটি। যে কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল রাজবাড়ী জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিএফএ) সভাপতি এবিএম মঞ্জুরুল আলম দুলালকে। এ কমিটির মেয়াদ ৩ মাস।
কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার আগেই তাকে ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল ডিএফএগুলোর কী অবস্থা, তার ওপর একটা প্রতিবেদন দিতে। মঞ্জুরুল আলম দুলাল বাফুফে কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট একজনকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেন ডিএফএগুলোয় শুভঙ্করের ফাঁকি।
বাফুফে নির্দেশিত তথ্য চেয়ে কমিটি প্রধান চিঠি দিয়েছিলেন ডিএফএগুলোকে। বেশিরভাগ ডিএফএ থেকে কোনো জবাবই আসেনি। কারণ, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক ডিএফএর বেশিরভাগ সদস্য লাপাত্তা।
Advertisement
১০টি ডিএফএ কমিটির মেয়াদই নেই। মেয়াদ নেই, কার্যক্রম নেই, বাৎসরিক ফি জমা না দেয়নি অনেক ডিএফএ। এর মধ্যে ঢাকা, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কোনো কার্যক্রমই নেই। ১৭ বছর ধরে তারা বাৎসরিক ফি-ই জমা দিচ্ছে না।
এমন সব অভিযোগ ও অনিয়ম মিলিয়ে ২৯ জেলার নাম বাফুফে সভাপতির কাছে জমা দিয়েছিলেন মঞ্জুরুল আলম দুলাল। বুধবারের নির্বাহী কমিটির সভায় ওই ডিএফএগুলোর বিদ্যমান কমিটি বিলুপ্ত করে অ্যাডহক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ ওঠা ডিএফএর সংখ্যা নিয়ে তৈরি হয় সমস্যা। তালিকায় ২৯টির নাম থাকলেও একটি ডিএফএর নাম আসা যথার্থ হয়নি উল্লেখ করে সে বিষয়ে নোট দিয়েছিলেন কমিটি প্রধান। এসব বিষয় নিয়ে কমিটির ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাফুফের সভাপতি। নির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্যসূত্রে জানা গেছে, এক পর্যায় সভাপতি এই মনিটরিং কমিটি বাতিলের কথা বলেছেন।
যদিও বাফুফের কোনো সূত্রই আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিচ্ছেন না। এমন কি আগের দিন ২৯ ডিএফএ'র সংখ্যাটা বললেও সেগুলোর নাম প্রকাশ করেনি বাফুফে। ডিএফএ নিয়ে একটা ঘোলাটে অবস্থা তৈরি করেছে বাফুফের নতুন নির্বাহী কমিটি।
Advertisement
ফুটবল অঙ্গনে অবশ্য খবর কমিটির প্রধান থেকে মঞ্জুরুল আলম দুলালকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে দুলাল রাজবাড়ী থেকে জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘আমি কোনো চিঠি পাইনি, কেউ মৌখিকভাবেও কিছু বলেননি। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানা পর্যন্ত এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে পারি না। বাফুফে আমাকে যে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দিয়েছিল আমি সে কাজগুলো করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। বাফুফে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নেবে, সেটা তাদের এখতিয়ার।’
কাজটা কঠিন। তো একা কিভাবে করলেন মাত্র ১৫ দিনে? জবাবে দুলাল বলেন, ‘আমি পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাইনি। একটা আংশিক কমিটি জমা দিয়েছিলেন ৬ জনের নাম প্রস্তাব করে। সে বিষয়ে কী হয়েছে জানি না। পটুয়াখালীর মামুন, চাপাইনবাবগঞ্জের তোফা, নোয়াখালীর ইকবাল বাহার, চট্টগ্রামের শহীদ ও ঢাকার জালালের নাম দিয়েছিলাম।’
আরআই/এমএমআর/জেআইএম