ক্যাম্পাস

পরিচর্যার অভাবে অকেজো পানির দুই প্ল্যান্ট

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সাত লাখ টাকারও বেশি মূল্যের দুইটি পানির প্ল্যান্ট পরিচর্যার অভাবে তিন বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গত তিন বছরে শিক্ষার্থীরা বারবার স্মারকলিপি দেওয়াসহ কয়েক দফায় আন্দোলনে নামলেও মেরামতের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে ক্যাম্পাসের অনুষদ ভবন ও ফলিত বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে বিশুদ্ধ পানির দুটি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়। তিন মাস অন্তর অন্তর কমপক্ষে একবার প্ল্যান্টগুলোর পরিচর্যা করতে হয়। এসব প্ল্যান্টে শতকরা ২৫ ভাগ রিফাইন হয়ে পুরোপুরি পরিশুদ্ধ পানি বের হয়। যা বাজারে বিক্রি হওয়া সাধারণ মিনারেলযুক্ত পানির চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যসম্মত। তাই ক্লাস চলাকালে পানের পাশাপাশি হলে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরাও এখান থেকে নিয়মিত পানি সংগ্রহ করতেন। কিন্তু পরিচর্যা ও মেরামতের অভাবে প্ল্যান্ট দুইটি বন্ধ থাকায় গত তিন বছর ধরে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে অগভীর নলকূপের পানি পান করছেন তারা।

জানা যায়, শুরুতে করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় পরিচর্যার অভাবে প্ল্যান্টগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে। পরে ক্যাম্পাস খোলার পর ২০২১ সালের নভেম্বরে ঠিক করা হলেও দু’য়েক মাস পর এগুলো আবার নষ্ট হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের স্মারকলিপি, মানববন্ধনসহ নানাভাবে দাবি জানালেও ঠিক করেনি কর্তৃপক্ষ। সর্বশেষ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করলেও ফল হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম মুহাম্মদ কারনাইন বলেন, পানির প্ল্যান্ট চালুর দাবিতে বেশ কয়েকবার ভিসির নিকট গেলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। প্রশাসনের অবহেলায় দীর্ঘদিন ধরে এগুলো বিকল হয়ে আছে। শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে দ্রুত প্ল্যান্টগুলো চালুর দাবি জানাচ্ছি।

Advertisement

সিফাত মোহাম্মদ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিগত সময়ে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের চাওয়াকে গুরুত্ব না দিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিলো। আমরা চাই নতুন প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে দ্রুত প্ল্যান্টগুলো মেরামত করুক।

প্রকৌশল দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, প্ল্যান্টগুলো সংস্কারে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে দুই বছর আগে নোট দেওয়া হলেও অনুমোদন মেলেনি। ফাইলটি এখনো রেজিস্ট্রার অফিসে আটকে রয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘গত প্রশাসনের সময় আমরা এগুলো সচল করার বিষয়ে কাজ করেছিলাম, কিন্তু আর্থিক অনুমোদন না পাওয়ায় প্ল্যান্ট দুটি আর ঠিক করা সম্ভব হয়নি। নতুন প্রশাসনের সঙ্গে এখনো আলোচনা হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, গত প্রশাসনের সময় কি হয়েছিলো জানি না। আমার কাছে এখনও এ সংক্রান্ত কোনো ফাইল আসেনি। যেহেতু এটা শিক্ষার্থীদের জরুরি প্রয়োজন, ফাইল এলে কীভাবে দ্রুত অনুমোদন দেওয়া যায় সেটা দেখবো।

Advertisement

মুনজুরুল ইসলাম/এএইচ/এএসএম