চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে ইতালি আসা অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। এই সময়ে সমুদ্রপথে ইতালি এসেছেন ৪৯ হাজার ৬৯১ জন অভিবাসী। এদের মধ্যে ১২ হাজার ৭০২ জন বাংলাদেশি, যা মোট আগমনের ২০ শতাংশ।
Advertisement
মোট আগমনের ১৮ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সিরিয়া। এর পরেই আছে তিউনিশিয়া (১২ শতাংশ), মিশর (ছয় শতাংশ), গিনি (পাঁচ শতাংশ), পাকিস্তান (পাঁচ শতাংশ), সুদান (তিন শতাংশ), ইরিত্রিয়া (তিন শতাংশ), মালি (তিন শতাংশ) এবং গাম্বিয়ার (দুই শতাংশ) নাম৷
বেড়েছে সিরিয়ান অভিবাসীএ বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি সিরিয়ান ইতালি পৌঁছেছেন। তখনও নতুন করে দেশটিতে সংঘাত শুরু হয়নি। ২০১৩ এবং ২০১৪ সালের পর এই প্রথম এত বেশিসংখ্যক সিরিয়ান সমুদ্রপথে ইটালিতে এসেছেন। চলতি বছর সিরিয়া থেকে আসা অভিবাসীদের ৭৭ শতাংশ পুরুষ, সাত শতাংশ নারী, ১১ শতাংশ শিশু এবং ৬ শতাংশ সঙ্গীবিহীন শিশু।
নভেম্বরে আগমন বেড়েছে ৪২ শতাংশনভেম্বরে সমুদ্রপথে আট হাজার একশ জন অভিবাসী ইতালি পৌঁছেছেন। অক্টোবরের চেয়ে এ সংখ্যা বেড়েছে ৪২ শতাংশ। ওই মাসে সমুদ্রপথে ইতালি পৌঁছেছেন পাঁচ হাজার ৭২২ জন। ৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
Advertisement
চলতি বছর ইতালিতে অভিবাসী আগমন ২০২৩ সালের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কমেছে। এ বছরের মাসের হিসাবেও দেখা গেছে আগমনের তারতম্য রয়েছে। ২০২৪ সালে জানুয়ারিতে দেশটিতে এসেছেন দুই হাজার ২৫৮, ফেব্রুয়ারিতে দুই হাজার ৩০১, মার্চে ছয় হাজার ৮৫৭, এপ্রিলে চার হাজার ৭২১, মে মাসে চার হাজার ৯৭৬, জুনে চার হাজার ৯০২, জুলাইয়ে সাত হাজার ৪৬৫, আগস্টে আট হাজার ৫২৬ জন অভিবাসী।
লিবিয়ার উপকূল থেকেই এসেছেন বেশিরভাগনভেম্বরে ইতালিতে আসা অভিবাসীরা রওনা হয়েছেন লিবিয়া, তিউনিশিয়া, তুরস্ক এবং আলজেরিয়ার উপকূল থেকে। কিন্তু মোট অভিবাসীর ৭৬ শতাংশই এসেছেন লিবিয়ার উপকূল থেকে।
নভেম্বরে আসা অভিবাসীদের অন্তত ৭৫ শতাংশ ইতালির দক্ষিণের ছোট দ্বীপ লাম্পেদুসায় এসে পৌঁছেছেন।
সমুদ্রপথে আসা বাকি ২৫ শতাংশ অভিবাসী পৌঁছেছেন ইতালির পোৎজালো, ত্রাপানি, জেনওয়া, রোকেলা আইওনিকা, রেজিও ক্যালাব্রিয়া, ক্রোটন, আওগুস্তা, কাতানিয়া, নেপলস, সিরাকুজে, ভিবো ভ্যালেন্তিয়া, লিভর্নো, লাম্পিওনি, পোর্তো পিনো, অর্তোনা, আনকোনা, পালেরমো, ব্রিন্দসি, সালেরনো, কাপো তেওলাদা, সিভিটাভেসিয়া এবং পুলায়।
Advertisement
অভিবাসীদের আগমন পয়েন্টে ইউএনএইচসিআর সক্রিয়ভাবে উপস্থিত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ইতালির কর্তৃপক্ষ, জাতীয় এবং ইউরোপীয় সংস্থা এবং অন্যান্য অংশীদারদের পাশাপাশি জাতিসংঘের এই সংস্থাটিও সেখানে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
সহযোগিতার মধ্যে রয়েছে, নতুন করে আসা অভিবাসীদের তথ্য সংগ্রহ করা, বিশেষায়িত পরিষেবার মাধ্যমে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং দুর্বল ব্যক্তিদের শনাক্ত করে যত্ন-আত্তি নিশ্চিত করা।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন এবং সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসছে ইউএনএইচসিআর। বিশেষ করে, সমুদ্রে অনুসন্ধান এবং উদ্ধার প্রক্রিয়া জোরদারের পাশাপাশি নিয়মিত অভিবাসনের পথ সহজ করতেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এমআরএম/এমএস