রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁওয়ের অদূরে তেজগাঁও মগবাজার ফ্লাইওভারের সোনারগাঁও অংশের নির্মাণ কাজের জন্য লোহার রডের রিং তৈরির কাজ করছিলেন সাইদুল নামে একজনসহ আরও জনা বিশেক রড মিস্ত্রি। ব্যস্ত রাস্তায় রোদে দাঁড়িয়ে তাদের মধ্যে দু’একজন লম্বা লোহার রড টেনে রিং বানানোর মেশিনে ঢুকানোর কাজ করছিলেন। মেশিনে দেয়ার পর সাইদুলসহ আরও কয়েকজন মিলে রডটিকে গোলাকার বৃত্তাকারে ঘুরিয়ে রডের রিং তৈরি করছিলেন। রাস্তার পথচারী, বাস, প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল আরোহীদের কেউ কেউ থমকে দাঁড়িয়ে বৃহৎ আকৃতির রডের রিং বানানোর দৃশ্য দেখছিলেন। গত ৩০ মার্চ এ ফ্লাইওভারটি উদ্ভোধনের পর থেকে সোনারগাঁও হোটেলের সংযোগ অংশে নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।শুধু রড মিস্ত্রি সাইদুলরাই নন, নির্মাণ কাজে কেউ রাস্তা খোঁড়ার কাজ, কেউ মাটি পাইলিং এর কাজ আবার কেউবা মাটি কাটা ও মাটি ফেলার কাজ করছেন। কৌতূহলবশত সামনে এগিয়ে সাইদুলের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায় ১৬ বছর যাবত রড মিস্ত্রির কাজ করছেন তিনি। তেজগাঁও মগবাজার ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের মাটি কাটা থেকে শুরু করে উদ্বোধন পর্যন্ত এখানে রড মিস্ত্রির কাজ করছেন তিনি।সাইদুল জানান, রড মিস্ত্রির কাজের বহু বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেও সরাসরি ফ্লাইওভারের রড তৈরির কাজ পাননি। ঠিকাদারের কাছ থেকে প্রতি কেজি রড আড়াই টাকা হিসেবে রিং বানানোর কাজ করেন।প্রতি টন রডের রিং তৈরি করলে ২ হাজার ৫শ’ টাকা বিল পান। প্রতিদিন তারা সবাই মিলে আট থেকে নয় টন রডের কাজ করেন। দীর্ঘদিন যাবত রড মিস্ত্রির কাজ করলেও ভাগ্যের তেমন উন্নতি না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সাইদুলসহ অন্যান্য রড মিস্ত্রি জাহাঙ্গীর, মিলন, লিটন, দুলাল, ফুল মিয়ার চোখে মুখে হতাশার অভিব্যক্তি ফুটে উঠে। সাইদুল আরো জানান, ভাল কাজ জানলেও তিনি সরাসরি কাজ পান না। ঠিকাদারের কাছ থেকে চুক্তিতে কাজ নিয়ে কাজ করেন।তিনি দুঃখ করে বলেন, এ ফ্লাইওভারে নির্মাণ কাজে কত দিন কত রাত মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কত শত টন রডের রিং বানিয়েছি কিন্তু ভাগ্যের তেমন উন্নতি হয়নি। অথচ কাজ না করেও ঠিকাদাররা ঠিকই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ প্রাপ্তিতেই খুশি সাইদুল। কারন তিনি বুঝে গেছেন খুঁটির জোর না থাকলে সরাসরি কাজ তিনি কখনও পাবেন না। কথায় কথায় অনেকক্ষণ পেরিয়ে যায়। হঠাৎ কথা থামিয়ে কাজে ফিরে যান সাইদুল। ভিডিও:এমইউ/একে/এবিএস
Advertisement