দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের অভিশংসনের প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন বিরোধী আইনপ্রণেতারা। দেশটিতে সামরিক আইন জারির ব্যর্থ প্রচেষ্টার অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে দক্ষিণ কোরিয়ায় হঠাৎ এক নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রেসিডেন্ট ইউন আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন। এই আদেশের পর সেনা সদস্যরা পার্লামেন্টে ঘিরে ফেললেও প্রায় ১৯০ জন আইনপ্রণেতা পুলিশি বাধা অতিক্রম করে ভোটকক্ষে প্রবেশ করেন এবং আইনটি বাতিল করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট নিজ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।
অভিশংসন প্রস্তাব উত্থাপনের পর ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপকে ‘বিদ্রোহী আচরণ’ আখ্যা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ইউনের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহের অপরাধে’ মামলা করা হবে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
ডেমোক্রেটিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কিম ইয়ং-জিন বলেন, গণতন্ত্রের পতন আমরা আর বরদাশত করতে পারি না। জনগণের জীবন ও নিরাপত্তা রক্ষায় আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।
বুধবার সিউলে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলো যথারীতি খোলা থাকলেও শহরজুড়ে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম শ্রমিক সংগঠন কোরিয়ান কনফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নস প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
পদত্যাগের ঢলবুধবার দক্ষিণ কোরীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন সামরিক আইন জারির দায় স্বীকার করে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এছাড়াও প্রেসেডন্টের প্রধান সচিব এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। তবে তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অভিশংসন প্রক্রিয়াদক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, অভিশংসনের প্রস্তাব পাশ করতে ৩০০ সদস্যের পার্লামেন্টের দুই-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ২০০ আইনপ্রণেতার সমর্থন প্রয়োজন। প্রস্তাব পাস হলে প্রেসিডেন্ট তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত হবেন এবং প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেবেন। এরপর সাংবিধানিক আদালতের অনুমোদনের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
Advertisement
এর আগেও দক্ষিণ কোরিয়ায় দুই প্রেসিডেন্ট অভিশংসনের সম্মুখীন হয়েছেন। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট পার্ক গুয়েন-হাই দুর্নীতির অভিযোগে অভিশংসিত হন। ২০০৪ সালে প্রেসিডেন্ট রো মু-হিউন সাময়িকভাবে বরখাস্ত হলেও পরে আদালত তাকে পুনর্বহাল করেন।
কেএএ/