ভারতের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ বাংলাদেশের পরম বন্ধু। তবে শাসকগোষ্ঠী ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী শক্তি গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি চায় না বলে মন্তব্য করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
Advertisement
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের সময় কলকাতা ও দিল্লির ছাত্ররা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন। তারা হাসিনার নৃশংসতা হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ভারতের সেসব গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিক আমাদের পরম বন্ধু। তবে ভারতের শাসকগোষ্ঠী ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী শক্তিরা এ গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি চায় না।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) নিজের ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। এতে তিনি ভারতের শাসকগোষ্ঠী ও হিন্দুত্ববাদীদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতি সম্প্রীতি ও সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানান।
নাহিদ ইসলাম লিখেন, ভারতের শাসকগোষ্ঠী বিভাজনের রাজনীতিতে লিপ্ত। তারা একের পর এক বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান ও ছাত্রদের রাজনৈতিক জাগরণকে হুমকি হিসেবে দেখে। তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করছে। ‘সংখ্যালঘু নিপীড়ন’ টার্ম ব্যবহার করে দিল্লি ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও জাতি-পুনঃনির্মাণ প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
Advertisement
পৃথক আরেকটি পোস্টে উপদেষ্টা নাহিদ লিখেন, শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি ভারত সরকারকে বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগের দৃষ্টিতে দেখা বন্ধ করতে হবে। ন্যায়, ন্যায্যতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে নতুন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশ হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আমলেই সংখ্যালঘুরা সর্বোচ্চ নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছিল। তবুও দিল্লি নিঃশর্তভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। যদিও ভারত তার নিজস্ব সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিপীড়নকারী দল আওয়ামী লীগকে আশ্রয় ও সমর্থন দিয়েছে, যারা কি না নিজে দেশের মানুষের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, গণহত্যা ও শিশু হত্যার জন্য দায়ী পলাতক শেখ হাসিনাকে আশ্রয় ও সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখার মাধ্যমে ভারত সরকার তার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করার ঝুঁকিতে রয়েছে। ভারতের স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতা বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা এবং অখণ্ডতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তা ভুলে গেলে চলবে না।
নাহিদ আরও লিখেন, বিজেপি বাংলাদেশকে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করার চেষ্টা করছে। এমনটা হলে তা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। বাংলাদেশবিরোধী এবং মুসলিমবিরোধী রাজনীতি ভারতের জাতীয় স্বার্থে কাজ করবে না। আমরা ভারতকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতি সম্প্রীতি ও সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
Advertisement
এএএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম