বিএনপির নেতাকর্মীদের ব্যানার-ফেস্টুনে সয়লাব হয়ে আছে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গেট। কয়েকটি ব্যানারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করতে দেখা গেছে। যেকোনো ব্যানার-ফেস্টুনে নিজের নামের আগে ‘দেশনায়ক’ বা ‘রাষ্ট্রনায়ক’ সম্বোধনে নিষেধ করেছেন তিনি। তবে, তার নিষেধাজ্ঞার পরও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে ‘আগামীর রাষ্ট্রনায়ক’ লেখা ব্যানার-ফেস্টুনে অপসারণ করা হয়নি।
Advertisement
সরেজমিন দেখা গেছে, থানা গেটের সামনেই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কয়েকটি ব্যানার টাঙানো রয়েছে। যার একটিতে তারেক রহমানের নামের আগে ‘রাষ্ট্রনায়ক’ লেখা ব্যবহার রয়েছে। অথচ গত ১৯ নভেম্বর রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিউটে আয়োজিত এক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এই শব্দগুলা উপাধি হিসেবে না দিতে অনুরোধ করেছিলেন তিনি। তার অনুরোধের পর দেশের বহু স্থানে ফেস্টুন অপসারণ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তবে, এখানকার থানা প্রাঙ্গণের দৃশ্যে পরিবর্তন আসেনি। শুধু বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী নয়, গণঅধিকার পরিষদের এক নেতার ব্যানারও দেখা গেছে সেখানে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তোপের মুখে হাসিনা সরকারের পতন হলে বিএনপি নেতাকর্মীরা থানার গেটে ব্যানার টাঙিয়েছেন বলে জানান স্থানীয়রা। থানা সংলগ্ন কয়েকজন দোকানি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলেও এত ব্যানার দেখা যায়নি।
থানার গেটে গণঅধিকার পরিষদের নেতার ব্যানার টাঙানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরিফ ভুঁইয়া বলেন, থানার প্রাঙ্গণে ব্যানার টাঙানো অদক্ষতার প্রমাণ। আমরা সেটা জানতাম না। আমি এখনই সরিয়ে দিতে বলছি।
Advertisement
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ফারহানের ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
নিজের ব্যানারে তারেক রহমানের নামের পাশে ‘রাষ্ট্রনায়ক’ লেখার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মাহমুদ ফয়সাল বলেন, ‘আমার কর্মীদের কেউ হয়তো লাগিয়েছে। ব্যানার তো অনেকগুলো ছিল, হয়তো দু-একটা থেকে যেতে পারে।
থানা গেটে রাজনৈতিক ব্যানার টাঙানো উচিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেকেই সেখানে লাগিয়েছেন। উচিত কিনা বলতে পারছি না।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাকিবুর রহমান সাগর বলেন, দল থেকে নির্দেশনা রয়েছে আমাদের দলের কোনো ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো যাবে না। এমন নির্দেশনার পরই আমরা ছাত্রদলের সব ব্যানার নামিয়ে ফেলেছি। হয়তো দু-একটা রয়েছে গেছে। যদি থেকে থাকে তাহলে যে ছাত্রদল নেতারই হোক নামিয়ে ফেলতে বলা হবে।
Advertisement
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এভাবে ব্যানার টাঙানো হয় সুবিধা নেওয়ার জন্য। এটাকে আমি সাপোর্ট করি না। যদি আমার দলের কেউ করে থাকেন তাদের সরিয়ে নিতে বলা হবে।’
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, ‘রাজনৈতিক ব্যানার-ফেস্টুন থানা প্রাঙ্গণে থাকা যাবে না। ওইটা রাজনৈতিক হিসেব। এগুলো খুব শিগগির সরিয়ে ফেলা হবে।’
মো. আকাশ/এসআর/জেআইএম