জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং মো. কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
Advertisement
একই সঙ্গে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন ও শুনানির জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) জুলাই-আগস্টে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলামকে আজ ৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে তাদের দুইজনকে হাজির করা হয় ট্রাইব্যুনালে।
Advertisement
এদিন সকালে তাদের গ্রেফতার দেখাতে আবেদন করে প্রসিকিউশন। পরে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন এবিএম সুলতান মাহমুদ।
শুনানি শেষে আদালত এই দুই আসামিকে আজ ৪ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেন। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা হত্যাসহ অনেকে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম সাংবাদিকদের ওইদিন বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ১৭ অক্টোবর একটি মামলায় দুইজন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। সেখানে মোট আসামি ছিলেন ৪৫ জন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আরেকজন হলেন কামরুল ইসলাম। এই দুজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকা অবস্থায় তারা গ্রেফতার হন। নিউমার্কেট থানার একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয় তাদের।
তিনি বলেন, আমরা ট্রাইব্যুনালে একটি দরখাস্ত দাখিল করেছি, তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করার জন্য। তাদের বিরুদ্ধে কি কি অভিযোগ পাওয়া গেছে তা আমরা ট্রাইব্যুনালে পড়ে শুনিয়েছি। ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হয়েছে এবং ৪ ডিসেম্বর তাদেরকে উপস্থাপন করার জন্য বলা হয়।
Advertisement
গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের চেষ্টায় ‘গণহত্যার’ দুই অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলামসহ এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও মিত্র দলগুলোর গ্রেফতার শীর্ষ কয়েকজন নেতার বিচার করতে যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাদের বিচার হবে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায়।
তাদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, ডা.দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনাইদ আহমেদ পলক, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলাম।
এফএইচ/এসএনআর/এমএস