খেলাধুলা

১৫ বছরের ব্যবধানে ‘দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজ’কে হারালো বাংলাদেশ

২০০৯ সালের জুলাই। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের স্মরণীয় মাস। গ্রেনেডার সেইন্ট জর্জে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। সঙ্গে সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে অন্যতম মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে টাইগাররা। সাকিব আল হাসান ও রকিবুলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজ জিতে তারা (২-০)। শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজই নয়, বিদেশের মাটিতে এটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়।

Advertisement

ওই সফরের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে আরও ৩ বার খেলতে যায় বাংলাদেশ। এসব সফরে মোট খেলে মোট ৬টি টেস্ট। কিন্তু একবারের জন্যও টাইগারদের মুখে ম্যাচ জয়ের আনন্দের রেখা ফুটেনি। অথচ পার হয়ে গেছে ১৫ বছর বা দেড় দশক।

দীর্ঘ দেড় দশক অপেক্ষার পর বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আবারও টেস্ট ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ। কিংস্টনে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্টে ক্যারিবীয়দের ১০১ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। স্বাগতিকদের হারানোর নায়ক এবার জাকের আলী অনিক ও তাইজুল ইসলাম। এবার অবশ্য ক্যারিবীয়দের সিরিজ হারাতে পারেনি টাইগাররা। তবে ধবলধোলাই এড়িয়ে সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করতে পেরেছে।

২০০৯ সালের জুলাই আর ২০২৪ সালের ডিসেম্বর, এই লম্বা সময়ে দুই দলের মধ্যে এসেছে নানান পরিবর্তন।

Advertisement

এক সময় বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন পঞ্চপাণ্ডব। সেই পাঁচজনের মধ্যে চারজন- সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, তামিম ইকবাল খেলেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শেষবার সিরিজ জয়ের ম্যাচে। শেষ টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে বল হাতে ৮ উইকেট আর ব্যাট হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৯৬ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন সাকিব।

এবারের জয়ে পঞ্চপাণ্ডবদের কেউ দলে নেই। মুশফিকের খেলার কথা থাকলেও ইনজুরির কারণে খেলেননি। সে হিসেবে এটি নতুন এক বাংলাদেশ। এটি ছিল তরুণদের বাংলাদেশ। এবার জয়ের নায়ক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৫০ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি। তার আগে ক্যারিয়ারসেরা ৯১ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন জাকের আলী অনিক।

অন্যদিকে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটের ছিল বেহাল দশা। অর্থ সংকটে জর্জরিত ছিল দেশটির ক্রিকেট বোর্ড। ভালো ক্রিকেটার নিয়ে দল গোছাতে হিমশিম খেতে হয়েছিল তাদেরকে। বোর্ডকর্তারাও ছিলেন দুর্নীতিগ্রস্থ। মাঠ ও মাঠের বাইরে ছিল অস্বস্তি। সব মিলিয়ে দূর্বলতম এক দল নিয়ে টাইগারদের বিপক্ষে ওই সিরিজ খেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

কালের পরিক্রমায় এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সেই সংকট কেটে গেছে। এখন বেশ ভালোভাবেই চলছে দেশটির ক্রিকেট যাত্রা। অর্থাৎ ১৫ বছরের ব্যবধানে নতুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের সাজানো-গোছানো দলের বিপক্ষে জয় পাওয়ার তৃপ্তিটাও বেশি এবার।

Advertisement

তাই বলা যায়, ১৫ বছরের ব্যবধানে দুই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

এমএইচ/এমএস