আইন-আদালত

জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা জ্বালানি নীতিতে রাখতে হাইকোর্টের রুল

কেন জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা (এমসিপিপি) ২০২২-২০৪১ দেশের মূল জ্বালানি নীতিতে থাকবে না এবং কেন আইইপিএমপি ২০২৩ বাতিল হবে না, সংশ্লিষ্টদের কাছে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

এর আগে সমন্বিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) ২০২৩-কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেন একদল আইনজীবী। তারা হলেন- ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান, অ্যাডভোকেট মনিরা হক মনি, অ্যাডভোকেট শিমন রায়হান।

আইনজীবীরা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম এ ধরনের কোনো রিট মামলা হলো, যাকে জলবায়ু ন্যায্যতার পথে ঐতিহাসিক এক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

Advertisement

জ্বালানি নিরাপত্তা ও পরিবেশ সুরক্ষার পক্ষে কাজ করে যাওয়া সামাজিক উদ্যোগ ল’ইয়ারস ফর এনার্জি এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের (লিড) নেতৃত্বে এ রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর সরকারের ক্রমাগত নির্ভরতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতাকে চ্যালেঞ্জ করার লক্ষ্যেই এই আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।

রিটকারীরা বলেন, বাংলাদেশ যেন স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিতে দেওয়া সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি পূরণে সচেষ্ট হয় এবং প্যারিস চুক্তি ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) মতো জলবায়ু সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর বাধ্যবাধকতা মেনে চলে তা নিশ্চিত করাই তাদের এই আইনি পদক্ষেপের লক্ষ্য।

বিশ্বব্যাপী নাগরিকরা জলবায়ু ইস্যুতে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে অনন্য সাধারণ বেশকিছু মামলা দায়ের করেছেন। লিডের নেতৃত্বে হওয়া রিটও তারই প্রতিফলন। সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার শিশুরা তাদের সরকারের জলবায়ু নীতির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পথে হেঁটেছে। লিডের এ রিটকে দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় অকার্যকর সরকারগুলোকে জবাবদিহির আওতায় আনতেও একে একটি অবিস্মরণীয় নজির হিসেবে দেখা হচ্ছে।

পরিবেশবাদী এ আইনজীবীরা জোর দিয়ে বলছেন, আইইপিএমপি পরিবেশ সুরক্ষা আইনের একাধিক ধারা এবং এর পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশের অধিকারে জোর দেওয়া বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(এ) ধারার মূল চেতনা লঙ্ঘন করছে। এ জ্বালানি মহাপরিকল্পনাটি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা অব্যাহত রেখেছে, যা পরিবেশের স্থায়িত্ব ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। কেননা, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গত গ্যাসই জলবায়ু পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি, এ কারণে বন্যা, সাইক্লোন, খরার মতো চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনার মাত্রা ও পরিমাণ বাড়ছে। যেসব চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলাদেশ বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।

Advertisement

আরএএস/এমএএইচ/